সংলাপ শেষে যা বললেন ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২৪শে মে ২০২২ ০৯:১৬ অপরাহ্ন
সংলাপ শেষে যা বললেন ফখরুল

সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু করেছে বিএনপি। মঙ্গলবার বিকেলে নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে এই সংলাপ শুরু হয়। রাজধানীর তোপখানা রোডে বিকেল ৫টায় শুরু হয় দুই পক্ষের বৈঠক। সেখানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও নাগরিক ঐক্যর সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বে দুই পক্ষের প্রতিনিধিরা অংশ নেন


দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা হয়েছে।



আশা করছি এই আলোচনার রেশ ধরে বাকি দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হবে। সত্যিকার অর্থে অতি দ্রুত আন্দোলন নিয়ে জনগণের সামনে প্রস্তুত হতে পারব।   

বৈঠক শেষে বেরিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজ আমি দুপুরের সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বলেছি যে, আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবার জন্য, দেশের মানুষের যে অধিকারগুলো হারিয়ে গেছে, ভোটের অধিকার, বেঁচে থাকবার অধিকার, বিচার পাওয়ার অধিকার ও তাদের কল্যাণের অধিকার এই বিষয়গুলোকে ফিরে পাওয়ার জন্য এবং এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে জনগণের একটি পার্লামেন্ট গঠন করার জন্য বৃহত্তর আন্দোলনের কথা ভেবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করেছি একটি যৌক্তিক পরিণতির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।


বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজ দেশের মানুষ আশা করে আছে যে, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো একটা ঐক্যের মধ্যে দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে একটা সফল কার্যকরী আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। সেই আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে এবং পরিবর্তনের মাধ্যমে জনগণের সরকার এবং পার্লামেন্ট গঠন হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা কথা বলেছি। অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গেও কথা বলব। অতি দ্রুত তাদের সঙ্গে আলোচনা শেষ করে আশা করছি একটা যৌথভাবে আন্দোলনের সূচনা করতে পারব। খুব শিগগিরই আমরা এই কাজটা করতে পারব।  


বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আজ আলোচনার মূল বিষয় হচ্ছে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার। একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন সময়ে একটা সরকার নিরপেক্ষ হবে। আলোচনা করেছি, নির্বাচন কমিশন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যে নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে নিয়ে একটি মতামতের ভিত্তিতে সরকার গঠন করা। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইতোমধ্যে বলেছেন যে, একটা জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। আরেকটি প্রধান বিষয় আছে, তাতে উনিও (মান্না )একমত হয়েছেন, তিনি বলেছেন খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে আটক করে রাখা হয়েছে, তার মুক্তি। শুধু আমরা নই, দেশের বেশিরভাগ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর যে মিথ্যা মামলা, গায়েবি মামলা এবং আটক করে রাখা হয়েছে তাদের মুক্তি ও মামলাগুলো প্রত্যাহার। এই যে নির্যাতন-নিপীড়ন চলছে এগুলো বন্ধ করা।


নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, জনগণের পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে একটা আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য যা যা করা দরকার, তা নিয়ে বিস্তারিত না হলেও মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। একটি বিষয়ে আমরা একমত যে, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়, নির্দলীয় সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে আমরা লড়াই করব। বৈঠকের শুরুতেই আমরা সেই বিষয়ে কথা বলেছি। এটাই ছিল আলোচনার ভিত্তি।


আন্দোলনকে যৌক্তিক পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে দলগুলোর বোঝাপড়ার বিষয়েও গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন মান্না।  


বৈঠকে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, নির্বাহী সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন অংশ নেন।


অন্যদিকে মান্নার সঙ্গে নাগরিক ঐক্যর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এস এম আকরাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাখরুল ইসলাম নবাব, জিল্লুর চৌধুরী দীপু, যুগ্ম সম্পাদক ডা. জাহেদ উর রহমান, কেন্দ্রীয় সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আবু জাহেদ মোহাম্মদ সারওয়ার, আনিসুর রহমান খসরু, মাহবুব মুকুল, মনজুর কাদের, এস এম এ কবির হাসান, আবু তালেব দেওয়ান, মুহিদুজ্জামান মুহিদ, আব্দুর রাজ্জাক রাজা প্রমুখ বৈঠকে অংশ নেন।