খালেদা জিয়ার জামিন হওয়া মানবিক অধিকার : জাফরুল্লাহ চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নেছার উদ্দিন খান, স্টাফ রিপোর্টার, সাভার:
প্রকাশিত: বুধবার ২৩শে মার্চ ২০২২ ০৫:৫৪ অপরাহ্ন
খালেদা জিয়ার জামিন হওয়া মানবিক অধিকার : জাফরুল্লাহ চৌধুরী

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম ট্রাস্টি ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, খালেদা জিয়ার জামিন পাওয়া তার মানবিক অধিকার, নৈতিক অধিকার। এই হাইকোর্টই ছিলো একটি ঘটনা খুনের মামলা, রিকশাওয়ালা তার স্ত্রীকে জবাই করে তার ফাঁসি হয়েছিলো। সব আদালতে ফাঁসি বহাল ছিলো। তবুও তার কয়েক সপ্তাহের জন্য জামিন হয়েছিলো। তাহলে খালেদা জিয়া তো কাউকে জবাই করেনি। তার নামে যেটা সেটা একটা প্রশ্নবোধক। আমি মনে করি ন্যায় এর খাতিরে তাকে জামিন দেওয়া উচিৎ।


বুধবার(২৩ মার্চ) দুপুরে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম ট্রাস্টি ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী।


এসময় তিনি মির্জা ফখরুলের এক কথার জবাবে বলেন, মির্জা ফখরুল কি বলেছেন তাতে তো আমার কিছু বলার নেই। তারা যদি তড়িঘড়ি  করতে চান, আমার কিছু করার নেই। আমি বলবো যে আন্দোলন করে দলীয় সরকারকে অবসান ঘটনাতে হবে। নির্বাচনে সবাইকে অংশ নিতে হবে। এই নির্বাচন কমিশনকে তাদের মেরুদণ্ড সোজা করে দাড়াতে হবে। তারা যদি এটা করতে না পারেন তাদের পদত্যাগ করা উচিত। 


তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আমলে ১৯৭৪ সালে তিন লক্ষ লোকের মৃত্যু হয়েছিলো অনাহারে। অথচ সেই বছর আমাদের আমাদের অমর্ত্য সেন নোবেল লোরিয়ান এর তথ্য মতে তৎকালীন সময়ে সবচেয়ে বেশি খাদ্য উৎপাদন হয়েছিল। কেন? এটা ছিল ভুল শাসন ও সুশাসনের অভাব। অনাচার, দুর্নীতি সেজন্যই যার খাদ্য প্রয়োজন তার কাছে খাদ্য পৌঁছাতে পারেনি। আজকে আবার সেই দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি। তবে অনাহারে কেউ নেই। এটা কিন্তু পরিষ্কার করে বলতে চাই। কিন্তু আজকে জাতি আজ ভিকারি জাতিতে পরিণত হয়েছে। রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে টিসিবির পণ্য নেওয়া এটা অত্যন্ত অপমানজনক। আমি বারবার বলেছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি রেশনিং করেন। কল্যাণকর রাষ্ট্র করার জন্য আপনি আলোকিত করেছেন। আপনাকে অভিনন্দন জানাই। আপনি যে সারা বাংলাদেশে আলোকিত করেছেন তবে সেই আলো যদি কৃষকের বাড়িতে না যায়। তাহলে তো আমাদের ব্যর্থতা। তাই আমার প্রস্তাব আপনি প্রত্যাকটি কৃষকের বাড়িতে তিনটি করে বাতি দেন নিজ খরচায়। তাকে ঋণ দেন বিনা সুদে।


ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এরশাদ সাহেব খারাপ হতে পারে কিন্তু তিনি কয়েকটা ভালো কাজ করেছেন। উনার আমলে কোনো দুর্ভিক্ষ ছিলনা। দাড়িদ্র ছিলো না। উনার একটি মূল কারণ হলো ওজিয়াই ওপেন জেনাল লাইসেন্স। আমি মনে করি এটাকে পূর্ণপ্রপস্থনের জন্য চিন্তা করা উচিৎ। তখন ছিলো মাত্র ১০ হাজার টাকা এটাকে যে কোনো ব্যাক্তি এখন ১ লাখ টাকার পণ্য আমদানি করতে পারে। তাহলে সিন্ডিকেট থাকবে না। সিন্ডিকেট না ভাঙতে পারলে আজকের ধনী-গরিবের বৈষম্য বাড়তেই থাকবে।


প্রধাণমন্ত্রীর উদ্দ্যেশে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্র না আনতে পারলে, মানুষ ভোট দিতে না পারলে জাতির ইতিহাসে আপনি অধপতিত হবেন। কিন্তু আপনার অনেক ভালো কাজ আছে। আমরা মনে করি আপনি সাহস করে সুষ্ঠু নির্বাচন দেন৷ আপনি জয়ী হবে।


বিচারকদের নিয়ে তিনি বলেন, জজ সাহেবদের একটু বাস্তবতা বোঝা দরকার। তারা চার মাস ছুটি কাটান এটা কোনো যৌক্তিকতা নেই। তারা তো সাহেব না। আজ যদি কৃষক বলেন আমি চার মাস কাজ করবো না। কালকেই তো এখানে দুর্ভিক্ষ হয়ে যাবে। এর জন্য অহেতুক এই চারমাস ছুটি বন্ধ করেন। সেটাকে বন্ধ করে ন্যয়ের পিড়িতে আসেন।


তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নামে আমরা আন্দোলন করেছি কিন্তু মূল যুদ্ধটা পরিচালনা করেছেন তাজউদ্দিন আহমেদ। আর সমর ক্ষেত্রে যারা যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন তার অন্যতম হিরো হলো এটিএম হায়দার বীর উত্তম। তাঁর অবদান না হলে ঢাকা শহরে গেরিলারা কম্পমান করতে পারত না। পাকিস্তানি দের মনে ভীতি যোগাতে পারতো না। আজ আমাদের দুর্ভাগ্য সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে এটিএম হায়দার কে সংবর্ধনা দেয় নি। আমরা তাকে অনুধাবন করি না।


গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোকচিত্র প্রদর্শনী উৎসবে উপস্থিত ছিলেন- গবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আবুল হোসেন, বিশিষ্ট অনুজীব বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সিইও ডাঃ মনজুর কাদির আহমেদ, জাতিসংঘ জনসংখ্যা পুরস্কারে ভূষিত প্রথম বাংলাদেশি নারী ডা. হালিদা হানুম আক্তার, আলোকচিত্রশিল্পী হাসান সাইফুদ্দীন চন্দন, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে উপস্থাপিত প্রথম বাংলাদেশি আলোকচিত্রশিল্পী কে.এম আসাদসহ প্রমুখ।