পশ্চিমবঙ্গের মাদ্রাসা ব্যবহার করে জঙ্গি তৎপরতা বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার ৩রা জুলাই ২০১৯ ১২:০৬ অপরাহ্ন
পশ্চিমবঙ্গের মাদ্রাসা ব্যবহার করে জঙ্গি তৎপরতা বাড়ছে

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের মাদ্রাসাগুলোকে তরুণ-তরুণীদের মগজধোলাইয়ের কাজে ব্যবহার করছে বাংলাদেশি জঙ্গিরা। বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠন জেএমবি এই মাদ্রাসাগুলোকে ব্যবহার করছে। মঙ্গলবার ভারতের পার্লামেন্টে এমন মন্তব্য করেন তিনি। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, দেশটির বাংলাদেশ সীমান্তে একাধিক জঙ্গিশিবির পরিচালনা করছে জেএমবি। সেই শিবিরে নিয়মিত যাতায়াত করে লস্কর-ই-তৈয়াবার জঙ্গিরা। শুধু আত্মগোপনের জন্যই নয়, সংগঠনে জনবলও নিয়োগ করছে তারা। আর এসব করা হচ্ছে মসজিদ-মাদ্রাসাগুলো থেকে। মূলত নদীয়া, মুর্শিদাবাদ ও মালদা জেলার মাদ্রাসাগুলোকে নিশানা করা হয়েছে। আসামের মুসলিম অধ্যুষিত জেলাগুলোতেও চলছে একই কায়দায় জঙ্গি রিক্রুটমেন্ট।

অমিত শাহের মন্ত্রণালয়ের দাবি, বাংলাদেশ ও ভারতে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে শরিয়া প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লড়াই করছে জেএমবি। এজন্য পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে গোপন আস্তানা তৈরি করেছে তারা। ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সভাপতি অমিত শাহের এমন মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি-র কাছে। উত্তরে তিনি বলেন, ওই বক্তব্য আমি দেখিনি। এটা দেখে মন্তব্য করতে হবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যা বলেছেন; রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে এ ধরনের কোনও নির্দেশনা এসেছে কিনা তা আমার জানা নেই। তবে একজন মাদ্রাসা শিক্ষককে জয় শ্রী রাম ধ্বনি দিতে বলপ্রয়োগ করাটাও ঠিক কাজ নয়।

বাংলাদেশ নিয়ে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের মন্তব্য অবশ্য এটাই প্রথম নয়। ভারতের গত সাধারণ নির্বাচনের প্রচারণায় যে রাজনীতিক সবচেয়ে চড়া গলায় বাংলাদেশ প্রশ্নে আক্রমণ শানিয়েছেন, তিনি অমিত শাহ। বিভিন্ন জনসভায় তিনি হুমকি দিয়েছেন, ভারত থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের খুঁজে বের করে দেশ থেকে তাড়ানো হবে। কোনও কূটনৈতিক সৌজন্যবোধ না রেখে সরাসরি বলেছেন, অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বলতে তিনি বাংলাদেশিদেরই বুঝিয়েছেন। এই কথিত অনুপ্রবেশকারীদের তিনি কী চোখে দেখেন সেটা পরিষ্কার হয় গত এপ্রিলে পশ্চিমবঙ্গের এক সমাবেশে দেওয়া তার বক্তব্যে। ওই সমাবেশে তিনি বলেন, অনুপ্রবেশকারীরা বাংলার মাটিতে উঁইপোকার মতো। বিজেপি সরকার তাদের এক এক করে তুলে বঙ্গোপসাগরে ছুড়ে ফেলবে।

আসামের বিতর্কিত যে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) জেরে রাজ্যের লাখ লাখ বাঙালি মুসলমানের রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, সেই একই প্রক্রিয়া পশ্চিমবঙ্গসহ দেশের আরও নানা রাজ্যে চালু হবে বলেও তিনি ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন। এই ‘রাষ্ট্রহীন’দের বাংলাদেশে ডিপোর্ট করাই বিজেপির ঘোষিত অবস্থান। দলের সভাপতি এই হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছেন, ‘মিলিয়ে নেবেন, অমিত শাহ যা বলে তা-ই করে!

ইনিউজ ৭১/এম.আর