Caught on camera: Bengal IAS officer thrashes youth for lewd comments on wife's FB profile by dnai.in/fS84@pooja_zeenews
থানায় ঢুকে পুলিশের সামনে এক যুবককে একের পর এক চড় মারছেন এক ব্যক্তি। তার সঙ্গে থাকা নারীও ওই যুবককে পর পর কয়েকবার চড়, লাথি মারলেন। তারপর ওই ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, তোমায় যদি আধা ঘণ্টার মধ্যে থানায় ঢুকিয়ে দিতে না পারি, তাহলে তোমাকে বাড়িতে এসে মেরে ফেলব! ভিডিওতে ওই যুবককে বার বার ক্ষমা চাইতেও দেখা যায়। কিন্তু তারপরেও চলতে থাকে মারধর। রোববার ৫ মিনিট ৫২ সেকেন্ডের এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শোরগোল পড়ে যায়। কে ওই ব্যক্তি? কেনই বা ওই যুবককে থানায় ঢুকে মারধর করছিলেন?
ঘটনাটি পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ারের। ভিডিওতে যে ব্যক্তি ও নারীকে মারধর করতে দেখা যাচ্ছে তারা হলেন আলিপুরদুয়ারের জেলাপ্রশাসক নিখিল নির্মল ও তার স্ত্রী নন্দিনী কৃষ্ণণ। আর যে যুবককে মারধর করা হচ্ছিল তিনি ওই জেলার বাসিন্দা। নাম বিনোদ। কিন্তু কেন এভাবে ওই যুবককে মারলেন জেলাশাসক ও তার স্ত্রী? কী তার অপরাধ ছিল? ঘটনার সূত্রপাত ফেসবুকে করা একটি মন্তব্যকে ঘিরে। অভিযোগ, জেলাপ্রশাসকের স্ত্রীর বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য করেছিলেন বিনোদ। তার বিরুদ্ধে ফালাকাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন জেলাপ্রশাসক।
তারপরই বিনোদকে আটক করে ফালাকাটা থানায় নিয়ে আসা হয়। তার কিছুক্ষণের মধ্যে থানায় সস্ত্রীক হাজির হন নিখিল নির্মল। থানায় তখন আইসি সৌম্যজিত রায় ছিলেন। থানায় ঢুকেই বিনোদকে টেনে নিয়ে এসে মারধর শুরু করেন জেলাপ্রশাসক ও তার স্ত্রী। চলতে থাকে থাপ্পড়, কিল-ঘুষি। সেই সঙ্গে তাকে শাসাতেও থাকেন নিখিল ও নন্দিনী।
ভিডিওতে দেখা যায়, জেলাপ্রশাসক বিনোদকে বলছেন, “তোমাকে যদি আধাঘণ্টার মধ্যে থানায় ঢুকিয়ে দিতে না পারি, তাহলে তোমাকে বাড়িতে গিয়ে মেরে ফেলতে পারি।” এখানেই থামেননি তিনি। তাকে এটাও বলতে শোনা যায়, “আমার জেলায় আমার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলবে না।” জেলাপ্রশাসকের স্ত্রী নন্দিনীও রেয়াত করেননি বিনোদকে। তাকে দেখা যায় ওই যুবককে চড়, লাথি-ঘুষি মারতে। পাশাপাশি হুমকি দিতে শোনা যায়, “কে বলেছে এই পোস্টটা দিতে? বলো…। এত বড় কথা বলার সময় মনে ছিল না?” বিনোদকে বার বার ক্ষমা চাইতেও দেখা যায়। কিন্তু তার পরও মারধর করতে থাকেন নিখিল নির্মল ও নন্দিনী।
পুলিশের কাছে বিনোদ জানিয়েছেন, জেলাপ্রশাসকের স্ত্রী তার ফেসবুক বন্ধু। কিন্তু তিনি যে জেলাপ্রশাসকের স্ত্রী সেটা জানতেন না। রোববার রাতে ফেসবুকে জেলাপ্রশাসকের স্ত্রীর সঙ্গে চ্যাট করছিলেন বিনোদ। সেখানে একটি বিষয় নিয়ে বিতর্ক হয়। তার পর নন্দিনী তাকে একটি গ্রুপে অ্যাড করেন। সেই গ্রুপে বিনোদকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন অনেকে। বিনোদের দাবি, তখনই তিনি জানতে পারেন, নন্দিনী জেলাপ্রশাসকের স্ত্রী। বিনোদের আরও দাবি, “নন্দিনী জেলাপ্রশাসকের স্ত্রী জানার পর আমি লিখি আপনি তো জেলাপ্রশাসকের আলোয় আলোকিত। এরপরই আমাকে অশালীন ভাষায় গালাগালি করা হয়। পাল্টা আমিও গালাগালি দিই।”
জেলাপ্রশাসক ও তার স্ত্রীর এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তোলপাড় শুরু হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। নানা রকম প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, থানায় ঢুকে ওই যুবককে মারধর করার এখতিয়ার কে দিল জেলাপ্রশাসককে? ভিডিওটি প্রসঙ্গে জেলাপ্রশাসককে ফোন করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তবে তার স্ত্রী নন্দিনী কৃষ্ণণ ফেসবুকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তিনি সেখানে লিখেছেন, ‘অনেক হয়েছে। সরানোর হলে সরিয়ে দিন। কিন্তু একজন ফ্যামিলি ম্যানকে এভাবে বিরক্ত করা বন্ধ করুন। কী জানেন আপনারা? আসল যে ঘটনাটা ঘটেছে সেটাই ভিডিওতে দেখানো হচ্ছে না!
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।