বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বক্তব্য প্রদান নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক মন্তব্য করেছেন, যা আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘টক টু আল জাজিরা’তে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই প্রসঙ্গে কথা বলেছেন।
ড. ইউনূস জানান, ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত এই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ভারত সরকারের সঙ্গে তার আলোচনায় মোদি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন যে, শেখ হাসিনার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বক্তব্য নিয়ন্ত্রণ করা তার জন্য সম্ভব নয়। ইউনূস বলেন, “আমি মোদিকে বলেছিলাম, আপনি যদি শেখ হাসিনাকে রাখতে চান, তবে তার বক্তব্যে আমি কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারব না, তবে তাঁর বক্তব্য বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে এবং সে কারণে আমাদের জন্য সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।”
এই বক্তব্যের পর, উপস্থাপক নিয়েভ বার্কার যখন মোদির মন্তব্য সম্পর্কে জানতে চান, ড. ইউনূস জানান, মোদি বলেন, “ভারত একটি মুক্ত সমাজ, যেখানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সবার জন্য উন্মুক্ত। আমি এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না।” ভারতের প্রধানমন্ত্রী এই মন্তব্যে শেখ হাসিনার বক্তব্যের ব্যাপারে তার অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন।
এদিকে, অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার বিচারের প্রসঙ্গেও কথা বলেন ড. ইউনূস। তিনি জানান, বিষয়টি একটি আইনি প্রক্রিয়া এবং আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে ভারতীয় সরকারের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে, তবে তারা এখনও সাড়া দেয়নি। ইউনূস জানান, আইনি প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় আদালত শিগগিরই নোটিস পাঠাবে এবং এ বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন তারা।
এছাড়া, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করবে কি না, সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, ড. ইউনূস বলেন, “এটি আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে। দলটি আগে নিজেদের সিদ্ধান্ত নিবে এবং তারপর নির্বাচন কমিশনও প্রতিক্রিয়া জানাবে।” তিনি আরও বলেন, “তাদের এখনও কোনো ঘোষণা দেয়া হয়নি।”
এভাবে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ভবিষ্যত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অবস্থান নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে, যা দেশের রাজনৈতিক গতি-প্রকৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।