কাশ্মির সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর ভারত এবং পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে ফের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। ২৭ এপ্রিল রাতে শুরু হওয়া এই গোলাগুলি টানা চতুর্থ রাত পর্যন্ত চলতে থাকে, যার ফলে উত্তেজনা আরও বাড়ে। তবে এ ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করেছে যে, পাকিস্তানি সেনারা বিনা উসকানিতে গুলি চালাতে শুরু করেছিল এবং ভারতীয় সেনারা দ্রুত এর জবাব দেয়।
ভারতীয় সেনারা জানিয়েছে, কুপওয়ারা ও পুঞ্চ জেলার বিপরীত পাশে পাকিস্তান সেনাদের কাছ থেকে ছোট অস্ত্র দিয়ে গুলি চালানো শুরু হয়। ভারতীয় সেনারা কার্যকরভাবে পাল্টা গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এই গোলাগুলির ঘটনা এমন সময় ঘটলো যখন জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যা ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মিরে সবচেয়ে বড় হামলা হিসেবে চিহ্নিত।
এদিকে, পাকিস্তানকে দোষারোপ করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, তাদের সেনাবাহিনী দাবি করছে যে, পাকিস্তানী সেনারা প্রথমে গোলাগুলি শুরু করে। তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এই গোলাগুলির ঘটনা নিয়ে এখনও কোন মন্তব্য বা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি। অন্যদিকে, চীনের সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, ভারতীয় সেনারা কোনো প্ররোচনা ছাড়াই নিয়ন্ত্রণরেখায় গুলি চালাতে শুরু করে এবং পরে পাকিস্তান পাল্টা গুলি চালায়।
কাশ্মিরে এ ধরনের সংঘর্ষ বৃদ্ধি পেলে তা ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলতে পারে। ইতোমধ্যেই, পেহেলগামে হামলার পর দুই দেশই একে অপরের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদের নিজ নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। পাকিস্তান এবং ভারত বর্তমানে একে অপরের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে ভারত সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করেছে এবং পাকিস্তান ভারতীয় বিমানের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করেছে।
এদিকে, ভারতীয় সেনারা দাবি করেছে, এটি প্রথমবারের মতো পুঞ্চ সেক্টরেও সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন ঘটল। এই গোলাগুলির ঘটনা কাশ্মিরের রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলছে, যা দুই দেশের মধ্যে আরও বড় সংকটের সৃষ্টি করতে পারে।