পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ রাজ্যে বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশ করাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাজ্যের প্রশাসনিক বৈঠকে বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে আলোচনা চলাকালে তিনি এ অভিযোগ করেন। খবর ইন্ডিয়া টুডের।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিএসএফ সীমান্তের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাংলায় অনুপ্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে এবং নারীদের ওপর নির্যাতন করছে। তিনি আরও জানান, তৃণমূল কংগ্রেস সীমান্ত পাহারা দেয় না, কারণ সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে নেই। তাই কেউ তৃণমূল কংগ্রেসকে দায়ী করলে তা অযৌক্তিক হবে। এই বিষয়ে তিনি রাজ্য পুলিশের মহাপরিচালককে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে সীমান্তের যেসব এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে, সেগুলো শনাক্ত করার নির্দেশও দিয়েছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমাদের কোনো শত্রুতা নেই, তবে বিএসএফের মাধ্যমে অপরাধীদের সীমান্ত পারাপারের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। তারা অপরাধ করে পালিয়ে আসে, আর এটি কেন্দ্রের সক্রিয় সহায়তায় হচ্ছে।
এদিকে, মমতার এই বক্তব্যের পর ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং পাল্টা অভিযোগ করেছেন যে, পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে। তিনি মমতার বিরুদ্ধে ভোটের রাজনীতি করার অভিযোগ এনে বলেছেন, মমতা পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশি মুসলমান এবং রোহিঙ্গাদের প্রবেশদ্বার বানাচ্ছেন।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কিছুদিন আগে মন্তব্য করেছিলেন যে, বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ পশ্চিমবঙ্গের শান্তি নষ্ট করছে। মমতার বক্তব্য সেই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়াতেই এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচন সামনে রেখে এ ইস্যুটি তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রধান বিষয় হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সীমান্ত নিরাপত্তা এবং অনুপ্রবেশের বিষয়টি ভোটের আগে উভয় দলের নির্বাচনী প্রচারের মূল হাতিয়ার হতে পারে।
মমতার অভিযোগ এবং কেন্দ্রের পাল্টা বক্তব্যে পশ্চিমবঙ্গে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে উত্তেজনা আরও বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের অবস্থান স্পষ্ট হলেও এর সমাধান কীভাবে হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।