বেআইনিভাবে ভারতে প্রবেশ করে অস্বস্তি আওয়ামী নেতারা , ১৮ গ্রেপ্তার !

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার ৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৭:৫২ অপরাহ্ন
বেআইনিভাবে ভারতে প্রবেশ করে অস্বস্তি আওয়ামী নেতারা , ১৮ গ্রেপ্তার !

বেআইনিভাবে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে ১৮ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতীয় পুলিশ। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর কড়া নজরদারি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যেও এ ধরনের অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভারতীয় পুলিশ আরও সাতজন ভারতীয় নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে, যারা ওই বাংলাদেশিদের আশ্রয় দিয়েছিল বলে অভিযোগ।


ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী (বিএসএফ) জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত বাংলাদেশিরা মূলত বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য , অবৈধ ভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিল বিগত সরকারের বহু নেতা কর্মীরা । এছাড়া নানামুখী কাজের সন্ধানে আসছে বহু মানুষ । বাংলাদেশে  দারিদ্র্য ও বেকারত্বের কারণে তারা এ ঝুঁকিপূর্ণ পথে পা বাড়িয়েছে। এসব বাংলাদেশি সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে প্রবেশের পর বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার পরিকল্পনা করেছিল। তাদের বেশিরভাগেরই স্থায়ী বাসস্থান বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে।


আটককৃত ভারতীয় নাগরিকরা স্থানীয়ভাবে পরিচিত চোরাচালান চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। পুলিশের ধারণা, এই চক্রের মাধ্যমেই বাংলাদেশিরা সীমান্ত পাড়ি দেয় এবং ভারতে প্রবেশ করে। এ চক্রটি সীমান্ত এলাকা থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের গ্রহণ করে এবং তাদের নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। বিনিময়ে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়।


ভারতীয় পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে বেআইনি অনুপ্রবেশ ও আশ্রয়দানের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং চোরাচালান চক্রের অন্য সদস্যদের খোঁজে অভিযান চলছে। পুলিশ এই চক্রের মূল হোতাদের চিহ্নিত করার জন্য সীমান্ত এলাকায় তল্লাশি বাড়িয়েছে এবং স্থানীয় জনগণের সহায়তা নিচ্ছে।


অন্যদিকে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, তারা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত রয়েছে এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এ ধরনের বেআইনি কার্যক্রমের বিরুদ্ধে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়ের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। সীমান্তে বেআইনি অনুপ্রবেশ রোধে দুই দেশের যৌথ প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে উভয় পক্ষই সম্মত হয়েছে।


এই ধরনের বেআইনি অনুপ্রবেশের ঘটনা দুই দেশের সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ থেকে ভারতে বেআইনি প্রবেশ রোধে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে আরও সক্রিয় হতে হবে। একইসঙ্গে, স্থানীয় জনগণকেও সচেতন করা প্রয়োজন যাতে তারা বেআইনি কার্যকলাপে জড়িত না হয়।


বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, দেশের ভেতরে কাজের সুযোগ বৃদ্ধি, দারিদ্র্য বিমোচন এবং সীমান্ত এলাকার জনগণকে সচেতন করার মাধ্যমে এ ধরনের অনুপ্রবেশ রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও, সীমান্তে কড়া নজরদারি এবং চোরাচালান রোধে দুই দেশের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তাও উল্লেখ করা হয়েছে।


উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রায় ৪,০৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে, যা দিয়ে প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ বেআইনিভাবে সীমান্ত পাড়ি দেয়। এ ধরনের ঘটনাগুলো দুই দেশের নিরাপত্তা ও সম্পর্কের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই সীমান্তে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে উভয় দেশের যৌথ প্রচেষ্টা অত্যন্ত জরুরি।