বাংলাদেশের রাজিনিতির সাথে মধুর সম্পর্কে সম্পর্কিত হয়ে আছে ছাত্র রাজনীতি । সেই স্বাধীনতার আগ থেকে সকল আন্দোলন সংগ্রাম এমনকি স্বাধীনতার সম্মুখ সময়ে ছিল ছাত্র রাজনীতির নেতারা । কিন্তু বর্তমানে সেই ছাত্র রাজনীতির জৌলুসে কিছু ভাটা পরেছে । উল্লেখ বর্তমানে দেখা যায় ছাত্র নয় এমনরাই ছাত্র রাজনীতির পোস্ট পেয়ে যাচ্ছে । ঠিক তেমনি বিবাহিত, মাদক মামলার আসামি এবং ছাত্রলীগ-ছাত্র সমাজের সঙ্গে যুক্তদের নিয়ে বরিশালের ১০ উপজেলা ও ছয় পৌর ছাত্রদলের কমিটি গঠনের তোড়জোড় চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ ছাত্র দলের বরিশাল জেলার নেতাদের বিরুদ্ধে। একাধিক উপজেলা ও পৌর শাখা ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশী নেতা অভিযোগ করেছেন, পাঁচ সদস্যের বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মাহফুজ আলম মিঠু পৌর ছাত্রদলের কমিটি গঠন করতে অর্থবাণিজ্যে নেমেছেন। এ কারণে যোগ্যরা পদবঞ্চিত হবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে জেলার সব উপজেলা এবং পৌর ছাত্রদলের ত্যাগী ও যোগ্য নেতাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
তবে এসব অভিযোগের প্রতিবাদে গত রোববার নগরীতে জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের ব্যানারে মানববন্ধন করেন জেলা সভাপতি মাহফুজ আলম মিঠুর অনুসারীরা। নগরীর অশ্বিনী কুমার হলের সামনে এক মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বানারীপাড়া, মুলাদী, হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জ, আগৈলঝাড়া ও উজিরপুর উপজেলার ছাত্রদল নেতারা। জেলা সভাপতি মাহফুজ আলম মিঠুর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অসত্য দাবি করেন বক্তারা। তারা জানান, সংগঠনের প্রতিপক্ষ গ্রুপ তাদের স্বার্থ হাসিল করতে না পেরে কাল্পনিক অভিযোগ তুলছেন। তবে অন্য একটি পক্ষ ইনিউজকে বলেন তাঁরা বানবন্ধন করেছেন কেবল কেন্দ্রীয় নেতাদের গালাগালি দিতে ।
উপজেলা ও পৌর শাখায় পদপ্রত্যাশী নেতারা অভিযোগ করেন, আগৈলঝাড়া উপজেলা ছাত্রদল নেতা মইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। অথচ মইদুলকে উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি করতে চাচ্ছেন মাহফুজ আলম মিঠু। বানারীপাড়া উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি পদে সাইদুল ইসলাম সোহাগকে চাচ্ছেন মিঠু। সোহাগও মাদক মামলার আসামি। হিজলা উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি পদে জেলা সভাপতির পছন্দ মনির নপ্তি। অথচ মনির বিবাহিত। তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগও আছে।
ছাত্রদল নেতারা অভিযোগ করেন, মুলাদী উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি পদে মহিউদ্দিন ঢালীর নাম চূড়ান্ত করার কথা বলা হচ্ছে। কারণ মহিউদ্দিন ঢালী জেলা সভাপতির ঘনিষ্ঠজন। কিন্তু উপজেলা আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতার সঙ্গে শহীদ মিনারে গিয়ে মহিউদ্দিন ঢালী ফুল দিয়েছেন- এমন ছবি রয়েছে উপজেলার শীর্ষ ছাত্রদল নেতাদের হাতে। তাদের দাবি, মহিউদ্দিন ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত। মুলাদী পৌর কমিটির সভাপতি পদে পছন্দ করা হয়েছে কবির মোল্লাকে। অথচ তিনি জাতীয় ছাত্র সমাজের সঙ্গে যুক্ত দীর্ঘদিন ধরে। মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি করতে চাচ্ছেন শাহাদত হোসেন সোহাগকে।
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জ ও মুলাদীর একাধিক ছাত্রদল নেতা অভিযোগ করেন, ইনিউজ৭১ কে বলেন , জেলা সভাপতি মাহফুজ আলম মিঠু কোনো উপজেলায় সশরীরে গিয়ে সম্মেলন কিংবা সভা না করে , তার অনুগতদের দিয়ে একটা নামমাত্রে সভা করে ঢাকায় বসে অর্থবাণিজ্যের মাধ্যমে জেলার ১০ উপজেলা ও ছয় পৌর ছাত্রদলের কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছেন। বাকেরগঞ্জ ছাত্রদলের এক নেতা অভিযোগ করেন, কমিটিতে শীর্ষ পদ দেওয়ার কথা বলে বাকেরগঞ্জ ছাত্রদলের পাঁচ-সাতজন নেতার কাছ থেকে অর্ধলাখ করে টাকা নিয়েছেন সভাপতি মিঠু। তার বিরুদ্ধে অন্যান্য উপজেলা ও পৌর কমিটিগুলোতেও শীর্ষ পদ দেওয়ার নাম করে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
হিজলা উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি পদে প্রার্থী ছিলেন আসাদুজ্জামান খান সজল , তিনি বয়সের জন্য যোগ্য নন এবারের কমিটিতে , তবে দীর্ঘ সময় ধরে তিনি ছাত্রদল কিংবা বিএনপির রাজনীতির সংগে নিজেকে যুক্ত রেখছেন । সেই তিনি ও ইনিউজকে বলেন , অভিযোগ করেন, আমার কাছে আমাদের দুর্দিনের কর্মীদের সভাপতি পদ দেওয়ার কথা বলে জেলা সভাপতি মাহফুজ আলম মিঠু ২ লক্ষ টাকা চেয়েছেন । মেহেন্দীগঞ্জের সভাপতি প্রার্থী মাসুদ রানার অভিযোগ, বিতর্কিত ও বিবাহিতদের নিয়ে মেহেন্দীগঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলা কমিটি করতে অর্থবাণিজ্য করেছেন জেলা সভাপতি মাহফুজ আলম। উপজেলা ও পৌর কমিটি করতে কেন্দ্রের যে নির্দেশনা রয়েছে জেলা সভাপতি তা অনুসরণ করছেন না।একই ধরনের অভিযোগ করেছেন হিজলার ছাত্রদল নেতা শাকিল তালুকদার ও মেহেন্দীগঞ্জের দেলোয়ার হোসেনও।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য ইনিউজ৭১ মুঠো ফোন যোগাযোগ করেন , জেলা ছাত্রদল সভাপতি মাহফুজ আলম মিঠুর সংগে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন , দলের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা সরকারি দলের এজেন্টরা তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। সংগঠনের গঠনতন্ত্র মেনে সবক'টি উপজেলা ও পৌর শাখার কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। যারা অর্থবাণিজ্যের অভিযোগ তুলছেন সংগঠনে তাদের তেমন ভূমিকা নেই। অযোগ্য বলেই মিথ্যা ছড়াচ্ছেন।জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রাঢ়ী বলেন, সভাপতি মাহফুজ আলম মিঠু বিতর্কিতদের নিয়ে উপজেলা ও পৌর কমিটিগুলো করছেন, এমন অভিযোগ পেয়েছি। এসব কমিটি করতে তিনি আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন বলে শুনেছি। অভিযোগুলো কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে জানানো হয়েছে।২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট মাহফুজ আলম মিঠুকে সভাপতি এবং কামরুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে পাঁচ সদস্যের জেলা ছাত্রদলের কমিটি গঠন করা হয়।