রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিম শিপনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রাত থেকে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) হারুন আর রশিদ। হারুন আর রশিদ বলেন, এএসপি আনিসুল করিমকে হত্যার ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তারা হত্যার দায় স্বীকার করেছে। এই ঘটনার সঙ্গে যারা যারা জড়িত তাদের সকলকেই আইনের আওতায় আনা হবে।
গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের দশ দিন করে রিমান্ড চাওয়া হবে। এছাড়া হাসপাতালটি পরিচালনায় সরকারি কোন অনুমোদন ছিল না বলে জানান তেজগাঁও ডিসি।পারিবারিক ঝামেলার কারণে সমস্যায় ভুগতে থাকা আনিসুল করিমকে গতকাল সোমবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মাইন্ড এইড হাসপাতালে আনা হয়েছিল। হাসপাতালটিতে ভর্তির কিছুক্ষণ পরই কর্মচারীদের পিটুনিতে তার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন পরিবার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করায় কর্মচারীরা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন।
ঘটনার পর হাসপাতালের অ্যাগ্রেসিভ ম্যানেজমেন্ট রুমে তাকে মারধরের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা যায়, হাসপাতালে ঢোকার পরই আনিসুলকে ৬-৭ জন টেনেহেঁচড়া একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। হাসাপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন তাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মাথার দিকে থাকা দুজন হাতের কনুই দিয়ে তাকে আঘাত করছিলেন। এ সময় একটি কাপড়ের টুকরা দিয়ে শিপনের হাত পেছনে বাঁধা হয়। চার মিনিট পর তাকে যখন উপুড় করা হয়, তখনই ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন শিপন।
এ ঘটনায় গতরাতে প্রথমে ছয়জনকে আটক করে পুলিশ। পরে আরও একজনকে আটক করা হয়।পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুলের মৃত্যুর ঘটনায় আজ সকালে রাজধানীর আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা মামলাটি করে বলে জানান আদাবর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুজ্জামান।এএসপি আনিসুল করিম যে হাসপাতালে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন সকালে আদাবরের সেই হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র আনিসুল করিম ৩১ বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। এক সন্তানের জনক আনিসুলের বাড়ি গাজীপুরে। সর্বশেষ আনিসুল করিম বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন।