প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২০, ৫:৩২
ব্রজমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। এটি বরিশালের অন্যতম একটি ঐতিহ্যবাহী কলেজ। যার রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস। ১৮৯৮ সালে মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত তার পিতার নামে ব্রজমোহন ১২৬ বিঘা জমির উপর কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত। তবে ইতিহাস রয়েছে বরিশালের তৎকালীন ম্যাজিষ্ট্রেট রমেশ চন্দ্র দত্তের অনুপ্রেরণায় প্রখ্যাত সমাজসেবক, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষানুরাগী মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত ১৮৮৪ সালে তারা বাবার নামে ব্রজমোহন ইন্সটিটিউট স্কুল (বিএম ইন্সটিটিউট) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
যা ১৮৯৮ সালে কলেজে উন্নীত হয়। তখন কলেজটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এর অধিভুক্ত ছিল। সেসময়ে এ কলেজের মান এতই উন্নত ছিল যে অনেকে একে দক্ষিণ বাংলার অক্সফোর্ড বলে আখ্যায়িত করেন। সে সময় থেকেই এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি সুনামের সাথে দক্ষিণাঞ্চলে শিক্ষা বিস্তার করে আসছে। ওই সময় প্রবেশিকা পরীক্ষায় সারা ভারত বর্ষে শতকরা ২২ ভাগের বেশি শিক্ষার্থী পাস করেনি। কিন্তু বিএম ইন্সটিটিউট থেকে শতকরা ৮২ ভাগ শিক্ষার্থী পাস করে। আর এতে সারা ভারতবর্ষ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
১৯২২-১৯৪৮ সময়টি ছিল বিএম কলেজের জন্য স্বর্ণযুগ। এ সাফল্য এমনকি স্যার উডবার্ন এবং অন্যান্য ইংরেজ উচ্চ আধিকারিকদের মন্তব্যও এনেছিল যে কলেজটিকে অক্সফোর্ডের সাথে স্থান দেওয়া উচিত। কিন্তু ১৯৪৭ সালে বিভাজন এ কলেজের জন্য এক ধাক্কা ছিল। সুতরাং অনার্স কোর্স বন্ধ ছিল। ১৯৬৪-৬৫ সালে বি.এম. কলেজে আবারও অনার্স কোর্স চালু হয়। বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এ কলেজটিতে ২২টি বিষয়ে অনার্স ও ২১ টি বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স চালু আছে। এ কলেজে বর্তমানে ১৮৫ জন দক্ষ ও বিচক্ষণ শিক্ষক মন্ডলী রয়েছেন। যারা কলেজের প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থীকে পাঠদান করাচ্ছেন।
কলেজের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে প্রায় ৪০ হাজার বই রয়েছে। কলেজটিতে ১টি বাণিজ্য ভবন, ২টি কলা ভবন, একটি অডিটোরিয়াম, ৪টি বিজ্ঞান ভবন ও ৩টি খেলার মাঠ রয়েছে। এছাড়া কলেজের দুই প্রান্তে দুটি বিশাল পুকুর কলেজের সৌন্দর্যকে করে তুলেছে মনোমুগ্ধকর।উল্লেখ্য, এ কলেজটি ৫২২, ৬২২, ৬৯৯ এর আন্দোলনের পাশাপাশি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে এবং বিশেষত একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে আখ্যায়িত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।