করোনায় স্থবির বিশ্বের সাথে থেমে গেছে সব।সারাবিশ্বের মত করোনার প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশেও।আক্রান্ত ছাড়িয়েছে লক্ষাধিক।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অবসর সময় কাটাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।এই অবসর সময় কিভাবে কাটাচ্ছেন তাই নিয়ে লিখেছেন শিক্ষার্থীরা।
শাহ মকদুর স্মরণ,খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় :- প্রথম দিকের দিনগুলো ছিল অনেক কঠিন। হঠাৎ করে এমন অস্বাভাবিক সময়ে নিজেকে মানিয়ে নিতে বেশ সমস্যাই হয়েছিল। কিন্তু এখন বাস্তবতার সাথে মানিয়ে নিয়েছি। করোনার সময়টাতে প্রায় সারাক্ষনই ঘরে থাকা হয়। সুতরাং অনেক অভ্যাস পরিবর্তন হয়েছে। কাজ করছি নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে। প্রেজেন্টেশন স্কিল ডেভেলপমেন্ট, টাইম মেনেজমেন্ট, লিডারশীপসহ আরো কিছু বিষয়ে অনলাইনে পড়াশোনা করার চেষ্টা করছি এবং অনেক কিছু শেখাও হচ্ছে।আমার লেখালিখির অভ্যাস অনেক আগে থেকে ছিল। কিন্তু কর্মব্যস্ত জীবনে সময় দেওয়া হতো না। এই অবসরে লেখার জন্য অনেক সময় পাচ্ছি।মোটকথা কোয়ারেন্টাইন এ কিছু না কিছু করার চেষ্টা করছি সব সময়। যাতে এই অস্বাভাবিক সময়ের পরে নিজেকে হারিয়ে না ফেলি।
শিবলী সাদিক লিছান,ঢাকা কলেজ:-বিশ্বব্যাপী ছড়ানো এই ভাইরাসের প্রভাবে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে প্রায় ৩ মাস যাবত অনাকাঙ্ক্ষিত ছুটির মধ্যে দিয়ে কালাতিপাত করতে হচ্ছে। ভালো খারাপ দুটি দিক নিয়েই এখন দিন কাটাচ্ছি সবাই। তবে অবসরের এই দিন গুলো সদ্ব্যবহারের জন্য আমি নিজেকে বিভিন্ন সামাজিক কাজের পাশা পাশি, ব্যক্তিগত কাজেও ব্যস্ত রাখছি। যেমনঃ ধর্মীয় জ্ঞান চর্চা, গল্পের বই পড়া, কবিতা লেখা, গান শোনা, ছবি আঁকা ইত্যাদি। সেই সাথে অবসরের এই সময়টাতে পরিবারের পাশা পাশি আত্বীয় স্বজন এবং বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করছি। এইসব সব ব্যস্ততাগুলো আমাকে ক্ষনিকের জন্য অবসরের কথা একদম ভুলিয়ে দেয়।
রিফাত নূর রাব্বি,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় :- ছুটি শুরুর প্রথম দিকে করোনা ভয়ে দিন কাটছিলো, পরবর্তীতে ছুটি বৃদ্ধিতে করোনা ভীতি কিছুটা কমেছে কিন্তু একজন স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী হিসেবে এখন আমার পড়ালেখার অনিশ্চয়তা, সেশনজট আর হতাশায় দিন কাটছে। আমার বাড়ি উপকূলীয় অঞ্চলে হওয়ায় এরমধ্যেই ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয় আমার বাড়ির আশপাশের এলাকা, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় একজন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে ত্রাণ দিতে ও ফ্রি মেডিকেল টিমের সাথে কাজ করেছি। বর্তমানে লেখালেখি,বাড়িতে কেরাম খেলা, নিয়মিত পত্রিকা আর কয়েকটি অনলাইন গণমাধ্যমে উপস্থাপক হিসেবে কাজ করছি। সারাদিন বাড়িতে অবস্থান করছি সেইসাথে বন্ধু, আত্নীয়দের সাথে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যোগাযোগ করছি। জুম বা গুগল মিটে বিভিন্ন ধরনের অনলাইন ওয়ার্কশপ ও মিটিং করছি।"
মোঃ রুহুল আমিন,ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি :- এই করোনা মহামারি ভাইরাসের কারনে সব কিছু বন্দ থাকায় প্রাকৃতিক পরিবেশ সেজেছে নতুন রূপে।দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্দ থাকায় অনেক সময় পাওয়ার কারণে নিজের জন্ম-ভূমিকে চিনে নিতে পেরেছি অন্যরকম ভাবে। এই অবসরে আমার সময় কাটছে বিভিন্ন ছোট গল্প, কবিতা ইতিহাসের এবং ইসলামের কিছু ধর্ম গ্রন্থের বই পড়ে। অনলাইনে শুরু করে দিয়েছে অনলাইন ক্লাস এবং অনলাইন পরিক্ষা । পড়াশোনা শুরু করতে হচ্ছে নতুন অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে।। করেনা এই পরিস্থিতিতে শিখেছি অনেক কিছু। করতে হচ্ছে ছোট বড় অনেক কাজ যা আমাদের ভবিষ্যৎ জীবন যাত্রায় অনেক কাজে দিবে। আমি একজন শিক্ষার্থী হিসেবে বলতে পারি এই করোনা ভাইরাসের কারনে প্রথম অবস্থায় অবসর সময় আনন্দ উপভোগ করলেও বর্তমান অবস্থায় তা বিরক্তিকর। এই অবসরে শিখেছি অনেক কিছু ।
এই সময় যতই আনন্দ মুখরিত কাটোক না কেন, আমি চাই যত-তারাতাড়ি সম্ভব সৃষ্টি কর্তা যেন এই গোটা বিশ্বকে সুস্থ- সুন্দর পরিবেশে ফিরিয়ে দিক।।
পৃথিবী দ্রুত সুস্থ হউক।ক্যাম্পাসে আবার আড্ডা জমে উঠুক।এই অবসর কেটে গিয়ে নেমে আসুক ব্যাস্ততা।সকালের সূর্য আবার সুস্থ হয়ে হাসুক।