অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ বিক্রির অভিযোগে চুয়াডাঙ্গার পাইকারি আড়তে অভিযান চালিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযানে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে অবরুদ্ধ করার পাশাপাশি এক সাংবাদিকের মাথা ফাটিয়ে দেয়। শনিবার দুপুরে শহরের নিচের বাজারের পাইকারি বাজারে এ ঘটনা ঘটে। ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, কয়েকদিন ধরে চুয়াডাঙ্গার খুচরা ও পাইকারি বাজারে অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে- এমন সংবাদ পেয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের এডিসি সিব্বির আহমেদ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমজাদ হোসেন শনিবার দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এডিসি) সিব্বির আহমেদ জানান, অভিযান চলাকালে অতিরিক্ত মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রির যথাযথ প্রমাণ ও মূল্য তালিকা না টানিয়ে ইচ্ছামতো পণ্য বিক্রির প্রমাণ পাওয়া যায়।
এ অভিযোগে বড় বাজারের (নিচের বাজার) আড়ত পট্টির নাফিসা বাণিজ্যালয়কে ২০ হাজার টাকা এবং জাহাঙ্গীর বাণিজ্যালয়কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করার পর পরই ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এ সময় উত্তেজিত ব্যবসায়ীরা সংঘবদ্ধ হয়ে দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে অবরুদ্ধ করে ধাক্কাধাক্কি করতে থাকে। অভিযানে থাকা পুলিশ সদস্যরা বাধা দিলে উত্তেজিত ব্যবসায়ীরা পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে মারমুখী আচরণ করে। লাঞ্ছিত করে দুই পুলিশ সদস্যকে। এ দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করার সময় ব্যবসায়ীরা হামলা চালায় এসএম শাফায়েত নামে স্থানীয় এক সংবাদকর্মীর ওপর। মারধর করে তার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। ভাঙচুর করা হয় তার মোবাইল ফোন।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ পুলিশ ও সাংবাদিকদের উদ্ধার করে। মারধরের শিকার শাফায়েত জানান, অভিযানের খবর পেয়ে তিনিসহ দুজন সংবাদ সংগ্রহে যান। এসময় ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশকে ঘেরাও করে রাখার ছবি তুলতে গেলে তাকে এবং তৌহিদুর রহমান তপু নামের আরেক সাংবাদিকে মারধর করে ব্যবসায়ীরা। ভেঙে ফেলে তার ব্যবহৃত একটি স্মার্টফোন। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার জানান, বাজার মনিটরিং করার সময় ব্যবসায়ীরা যে ঘটনা ঘটিয়েছে তা ন্যক্কারজনক। অবশ্যই এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে আমি এ ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছি।
চুয়াডাঙ্গা জেলা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইবরুল হাসান জোয়ার্দ্দার ইবু গোটা ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘ভুল বোঝাবুঝি থেকে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বাজার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক।’ এদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় দুই সংবাদকর্মীর ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রেসক্লাব। সংগঠনের সভাপতি মানিক আকবর ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম ডালিম ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।