দুই মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে বিজিএমইএ'র নতুন ভবন ঘেরাও করে রেখেছেন সাভারের আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। রোববার (২৭ অক্টোবর) দুপুর দেড়টার দিকে উত্তরায় অবস্থিত বিজিএমইএ'র নতুন ভবনের সামনে অবস্থান নেন শ্রমিকরা। এর আগে, সকালে আশুলিয়ার বেলমায় অবস্থিত ‘ট্রেন্ডি আউটওয়্যার লিমিটেড’ কারখানার প্রায় ৭০০ শ্রমিক হেঁটে বিজিএমইএ ভবনের উদ্দেশে রওনা দেন। এসময় মিরপুর-চারাবাগ সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে এ সড়কে চলাচলরত যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
শ্রমিকরা জানায়, সেপ্টেম্বর মাসের বেতন নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ নানা টালবাহানা শুরু করেন। সেপ্টেম্বর মাসের বেতনের দাবিতে তারা এর আগেও আন্দোলন করেছেন। সে সময় কারখানা কর্তৃপক্ষ (২৬ অক্টোবর) শনিবার বেতন পরিশোধ করবে বলে সময় দেন। গতকাল শনিবার এলে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখতে পান। পরে ক্ষুব্ধ হয়ে রোববার দুপুরে বিজিএমইএ ভবন ঘেরাও করেন তারা।
কারখানাটির কাটিং বিভাগের শ্রমিক মো. হজরত আলী বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ সব সময় আমাদের বেতন নিয়ে ঝামেলা করেন। আমরা কাজ করি তারা বেতন দেবে কিন্তু এর মধ্যে এতো ঝামেলা করে কেনো। গত মাসেরও বেতন দেয়নি এ মাসেরও প্রায় শেষ সেই হিসেবে আমরা দুই মাসের বেতন পাবো। এতে আমরা শ্রমিকরা আর্থিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তাই ৭০০ শ্রমিক মিলে বিজিএমইএ ভবন ঘেরাও করেছি। বেতন না দেওয়া পর্যন্ত আমরা এখান থেকে যাবো না।
কারখানাটির অপারেটর রুপি বলেন, আজ দুই মাস ধরে বেতন দেয় না আমাদের। ভাড়া ছাড়া বাড়িতে উঠতে দিচ্ছে না বাড়ির মালিক। আর দোকানেও তো টাকা পাবে। তাই দোকান থেকে কোনো কিছু আনতেও পারছিনা। দোকানদার বাকি টাকা চাচ্ছে। এখন আমি কি করবো, কোথায় যাবো, কি খাবো কিছুই বুঝতে পারছি না। তাই বেতন না পাওয়া পর্যন্ত বিজিএমইএ ভবন ছাড়ছি না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেডিমেড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সফিউর ইসলাম সুলতান বলেন, এই কারখানাটিতে এর আগেও বেতন নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। সেসময় কারখানা কর্তৃপক্ষ একটা সময় চেয়েছে আমরা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে সময়ও দিয়েছি। গতকাল বেতন দেওয়ার কথা থাকলে কারখানা কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। তাই বেতনের দাবিতে আমরা সবাই মিলে বিজিএমইএ ভবনে এসেছি। বেতন না পাওয়া পর্যন্ত এই ভবন থেকে কোথাও যাবো না।
এ ব্যাপারে কারখানার জনপ্রশাসন কর্মকর্তা নরুল ইসলাম সুজন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমাদের মালিকও অনেক ঝামেলায় আছেন। তাই কারখানা আরও তিনদিন ছুটি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মালিকের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আগামী বুধবার (৩০ অক্টোবর) এর আগে কোনোভাবেই বকেয়া পরিশোধ করতে পারবেন না।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।