অন্তঃসত্ত্বা নারীর কেবিনের সিট দখল করে গন্তব্যে ডিআইজি!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: রবিবার ২১শে জুলাই ২০১৯ ০৮:০৯ অপরাহ্ন
অন্তঃসত্ত্বা নারীর কেবিনের সিট দখল করে গন্তব্যে ডিআইজি!

কমলাপুর স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠে একজন অন্তঃসত্ত্বা নারী দেখেন তার কেবিনের সিট জুড়ে বসে আছেন রেলওয়ে পুলিশের এক উপপরিদর্শক (ডিআইজি)। কেবিনে ঢুকতে গেলেই তিনজন পুলিশ সদস্যের বাধার মুখে পড়েন ওই নারী। তাকে বলা হয়, ভেতরে ডিআইজি স্যার আছেন অন্য কেবিনে বসেন। এ সময় ওই মহিলা তার টিকেট দেখালেও হুমকিতে দিয়ে বের করে দেয় পুলিশ। অন্তঃসত্ত্বা ওই নারী আধাঘণ্টা কেবিনের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। পরে বিমানবন্দর স্টেশনে গিয়ে ডিআইজি নেমে গেলে কেবিনের নির্ধারিত আসন ফিরে পান ওই নারী। শনিবার (২০ জুলাই) বুধবার ঢাকা থেকে খুলনাগামী আন্তঃনগর চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনে এ ঘটনা ঘটে। রেলওয়ে পুলিশের ডিআইজি শামসুদ্দিন ওই নারী যাত্রীর কেবিন জুড়ে বসেছিলেন।

গত মাসেও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ঢাকা থেকে উড়োজাহাজে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে নির্বাচন কমিশনারের নির্ধারিত বিজনেস ক্লাস সিটে বসেছিলেন। পরে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার এ নিয়ে অভিযোগ দিয়েছিলেন। বিষয়টি জেনে দুঃখপ্রকাশ করে রিজেন্ট এয়ার কর্তৃপক্ষ পরে ঘটনাটি তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিল। শনিবারে ট্রেনের ঘটনার সময় সেখানে ডিআইজির প্রটোকল হিসেবে কমলাপুর রেলওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুশো বণিক ছিলেন। ঘটনার সত্যতা জানতে ফোনে যোগাযোগ করা হলে ওসি এ ঘটনা স্বীকার করেন। বলেন, ‘ওই নারীকে অন্য সিটে বসতে বলা হয়। এয়ারপোর্ট স্টেশন পর্যন্ত গিয়েছিলেন ডিআইজি স্যার। ওই সময় স্যার কেবিনে বসেছিলেন।’

কেন আরেকজন যাত্রীর কেবিনে ঢুকে বসবেন ডিআইজি, এমন প্রশ্নের উ্ত্তরে ওসি বলেন, ‘ডিউজি স্যারের তো পাস আছে।’ কিন্তু এই আসন তো নারী যাত্রীর ছিল এমন কথার পর কোনো উত্তর দেননি ওসি। এ বিষয়ে ডিআইজি শামসুদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘এয়ারপোর্ট গিয়ে তো আমি নেমে গিয়েছি। এরপর তো ওনারা ওনাদের ওখানে বসেছেন।’ আরেকজন যাত্রীর নির্ধারিত সিটে কীভাবে বসলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আসনটি খালি ছিল তাই বসেছি।’ এরপর বিরক্তি প্রকাশ করে ফোন লাইন কেটে দেন ডিআইজি শামসুদ্দিন।

রেলযাত্রী ওই নারীর অভিযোগ, ‘পুলিশ কর্মকর্তা শামসুদ্দিনের কারণে তিনি কমলাপুর থেকে এয়ারপোর্ট স্টেশন পর্যন্ত দাঁড়িয়ে গেছেন। শামসুদ্দিন টিকিটবিহীন ছিলেন এবং পুলিশ তদারকিতে কেবিন জুড়ে ছিলেন।’ ট্রেনে পুলিশ গেলে তাদের কি টিকিট লাগে না? এমন প্রশ্নের জবাবে রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম রিপন বলেন, ‘সবার জন্য টিকিট লাগবে। টিকিট ছাড়া কেউই রেলে বসতে পারেন না। এমনকি আমার যে পাস কার্ড আছে তা দেখিয়ে অন্য যাত্রীদের মতো টিকিট নিয়ে নির্ধারিত আসনে বসে যেতে হবে। পুলিশসহ সবার বেলায়ই একই নিয়ম।’

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব