বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেন, দেশের ৩ কোটি ৭০ লাখ সংখ্যালঘু নিখোঁজ রয়েছেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা যে অভিযোগ করেছেন তা একান্তই তার নিজস্ব বক্তব্য, সংগঠনের নয়। শনিবার (২০ জুলাই) সকালে এ কথা বলেন রানা দাশগুপ্ত। এ বিষয়ে রানা দাশগুপ্ত বলেন,প্রিয়া সাহার বক্তব্য তো প্রিয় সাহারই। আমাদের সংগঠন এরকম কোনো বক্তব্যের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কাউকে তো বলে নাই যে, তুমি এভাবে বলবা। অতএব প্রিয়া সাহার মত প্রিয়া সাহারই।
তিনি বলেন, প্রিয়া সাহার ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে, এ অভিযোগ সত্য। তার ঘরবাড়ি পুড়ানোর ঘটনা দুই-এক মাস আগের। তিনি বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে ফ্রিডম অব রিলিজিয়ান নামে একটি সম্মেলন হয়। এতে আমাদের ঐক্য পরিষদের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। সেই প্রতিনিধি দলে প্রিয়া সাহা ছিলেন না। তাহলে প্রিয়া সাহা কীভাবে সেখানে গেলেন? জানতে চাইলে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে, ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে উনাকে পাঠানো হয়নি। তিনি কীভাবে গেলেন, এটা মার্কিন দূতাবাস বলতে পারবে।
গত ১৬ জুলাই ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার ২৭ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে ১৬টি দেশের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহাও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে প্রিয়া সাহা বলেন, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান নিখোঁজ রয়েছেন। দয়া করে আমাদের লোকজনকে সহায়তা করুন। আমরা আমাদের দেশে থাকতে চাই।
হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের তিন সদস্যের কেউ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেননি দাবি করে রানা দাশগুপ্ত বলেন, তারা যদি ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতেন, তাহলে তো প্রিয়া সাহার মতো আসত, ভাইরাল হতো। ভাইরাল যখন হয় নাই, তখন তারা দেখা করেন নাই। ট্রাম্পের কাছে এমন অভিযোগ করায় প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না, তা পরিষ্কার করেননি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক। সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি না- জানতে চাইলে রানা দাশগুপ্ত বলেন, সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমাদের তো কিছু নিয়ম আছে। প্রিয়া সাহাকে তো প্রথমে দেশে আসতে হবে। তারপরে না সাংগঠনিক ব্যবস্থা। সাংগঠনিক ব্যবস্থার আগে যে কথা আসে, তা হলো প্রথমে শোকজ করতে হয়। আমাদের নিয়ম হচ্ছে, কারও বিরুদ্ধে ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া যায় না, যতক্ষণ তাকে শোকজ করা না হবে।
তাহলে প্রিয়া সাহা দেশে আসলে শোকজ করবেন? এমন কথার জবাবে তিনি বলেন, এটা তো আমি আপনাকে বলিনি। এটা তো আমাদের সাংগঠনিক সিদ্ধান্তের অংশ। শোকজের সিদ্ধান্ত নিতে হলে সভা করতে হবে না? সভা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর এখন তো বাজে সকাল ৯টা। তাছাড়া আমি নিজেই অসুস্থ, ঘর থেকে বের হতে পারছি না। আমার একটা অপারেশন হবে কালকে (রোববার)। বুধবার (১৭ জুলাই) প্রিয়া সাহা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে গিয়ে দেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান নিখোঁজ রয়েছেন। তিনি বলেন, দয়া করে আমাদের লোকজনকে সহায়তা করুন। আমরা আমাদের দেশে থাকতে চাই।
এরপর তিনি বলেন, এখন সেখানে ১ কোটি ৮০ লাখ সংখ্যালঘু রয়েছে। আমরা আমাদের বাড়িঘর খুইয়েছি। তারা আমাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে, তারা আমাদের ভূমি দখল করে নিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো বিচার পাইনি। ভিডিওতে দেখা গেছে, এক পর্যায়ে ট্রাম্প নিজেই সহানুভূতিশীলতার স্বরূপ এই নারীর সঙ্গে হাত মেলান। কারা এমন নিপীড়ন চালাচ্ছে? ট্রাম্পের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রিয়া সাহা বলেন, দেশটির মৌলবাদীরা এসব করছে। তারা সবসময় রাজনৈতিক আশ্রয় পাচ্ছে। গত ১৮ জুলাই ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার ২৭ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে ২৭টি দেশের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করে। এই নারীও সেদিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান। তখন তিনি এই অভিযোগ করেন।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।