নরসিংদীতে চাঞ্চল্যকর কিশোরীকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর মৃতদেহে ধর্ষণ। র্যাব ১১ এর অভিযানে নরপশু ধর্ষক সাইফুল গ্রেফপ্তার। জেলার শিবপুরে চাঞ্চল্যকর নিখোঁজের দুই দিন পর কিশোরীর সাবিনা আক্তার (২১) নামে এক কিশোরীর মৃতদেহ উদ্ধার ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে র্যাব ১১। ধর্ষণে বাঁধা দেয়ায় সাবিনাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে নরপশু ধর্ষক সাইফুল। এরপরে কিশোরীকে মৃতদেহ ধর্ষণ করে নরপশু ধর্ষণকারী। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১১ জুন) রাতে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া আসামী নরপশু ধর্ষক সাইফুল ইসলাম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছে। আসামী নরপশু সাইফুল শিবপুর উপজেলার দুলালপুর খালপাড় গ্রামের মৃত হানিফ ফকিরের পুত্র। বুধবার (১২ জুন) দুপুরে নরসিংদী প্রেসকাবে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে: কর্ণেল কাজী শামসের উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, নিখোঁজের দুইদিন পর গত (৮ জুন) শিবপুর উপজেলার কাজীর চর গ্রামের একটি কলা ক্ষেত থেকে একই উপজেলার মাছিমপুর মধ্যপাড়া গ্রামের মিলন মিয়ার মেয়ে সাবিনার (২১) মৃতদেহ উদ্ধার করে শিবপুর থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহত সাবিনার মোবাইল নম্বরের সূত্রধরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার রাতে শিবপুরের কলেজ গেইট এলাকা থেকে নরপশু দুই সন্তানের জনক নরপশু সাইফুল ইসলাম (২৮) কে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১ এর একটি বিশেষ গোয়েন্দা দল। এসময় র্যাব ১১ এর জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত নরপশু সাইফুল জানায়, প্রথম স্ত্রীর সাথে ডিভোর্স হওয়ার পর শাহীনুর বেগম নামে তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সংসারে ৫ বছর ও ১০ মাস বয়সী দুই সন্তান রয়েছে। প্রায় তিনমাস পূর্বে শিবপুর উপজেলার ধানুয়াস্থ একটি মাজারে তার সঙ্গে পরিচয় ঘটে একই উপজেলার কিশোরী সাবিনা আক্তারের। এসময় সাইফুল তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তানের তথ্য গোপন করে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সাবিনার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এই সূত্র ধরে প্রেমিকা সাবিনা আক্তারকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যেতো নরপশু সাইফুল। এ সুযোগে সাইফুল একাধিকবার সাবিনার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে, ব্যর্থ হয়।এরই মধ্যে তাদের প্রেমের সম্পর্ক জানতে পারে সাবিনার চাচাতো বোন।
পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সাবিনাকে ধর্ষণের ফন্দি আটে প্রেমিক নরপশু সাইফুল। বেশকিছুদিন পর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সাইফুল ও সাবিনা বিয়ে করার জন্য গত( ৬ জুন) বিকালে শিবপুরে দুজন একত্রিত হয়। এসময় একটি সিএনজি অটোরিকশাযোগে পার্শ্ববর্তী পলাশ উপজেলার টান চলনা গ্রামে চাচাতো বোনে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় তারা দুজন।পথে রাত নয়টার দিকে সিএনজি থেকে নেমে কৌশলে কিশোরী সাবিনাকে একটি কলাক্ষেতে নিয়ে যায় প্রেমিক সাইফুল। সেখানে কিশোরী সাবিনাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা চালয়। ধর্ষণে ব্যর্থ হয়। এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে সাবিনার আত্ত চিৎকার শুরু করলে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে নরপশু সাইফুল তার শার্ট দিয়ে মুখ চেপে ধরে সাবিনাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যার পর নরপশু সাইফুল কিশোরী সাবিনার মৃতদেহ ধর্ষণ করে বিবস্ত্র অবস্থায় ফেলে রেখে তার ফোন, ভ্যানিটি ব্যাগ নিয়ে নিজ বাড়িতে পালিয়ে যায়। পরে মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে বাড়ির টয়লেটে ও ভ্যানিটি ব্যাগটি বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি নর্দমায় ফেলে দিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
মঙ্গলবার ১১ জুন রাত ১১ টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন এর নেতৃত্বে র্যাব-১১ এর একটি বিশেষ গোয়েন্দা দল তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সাইফুলকে আটক করলে সে হত্যা ও ধর্ষণের বিস্তারিত বিবরণ দেয়। আসামী নরপশু সাইফুলের দেয়া তথ্যমতে তার বাড়ি থেকে নিহত কিশোরীর সাবিনার ভ্যানিটি ব্যাগ, মোবাইল ও শ্বাসরোধে ব্যবহৃত শার্ট উদ্ধার করেছে র্যাব১১।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।