ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ে ক্ষমা চাইলেন মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শুক্রবার ৩১শে মে ২০১৯ ০৩:৩০ অপরাহ্ন
ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ে ক্ষমা চাইলেন মন্ত্রী

ব্যাপক প্রস্ততি সত্ত্বেও ঈদযাত্রার শুরুতেই ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ে ভোগান্তির শিকার হওয়ায় যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।তিনি বলেন, ৩-৪টি ট্রেন ছাড়তে দেরি হয়েছে, এজন্য যাত্রীদের ভোগান্তি সইতে হচ্ছে।আমরা এজন্য দু:খ প্রকাশ করছি। কাল থেকে আশা করছি শিডিউল অনুযায়ী ট্রেন চলবে। শুক্রবার সকাল ১০টায় কমলাপুর রেলস্টেশনে ঈদ উপলক্ষে রেলওয়ের সার্বিক কার্যক্রম পরিদর্শন করতে এসে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন। রেলমন্ত্রী বলেন, ঈদ উপলক্ষে শুক্রবার ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত কমলাপুর থেকে ১৮টি ট্রেন ছেড়ে গেছে। তন্মেধ্য ১৪টি ট্রেন নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে গেছে। সুন্দরবন, ধুমকেতু ও রংপুর এক্সপ্রেসসহ উত্তরবঙ্গগামী চারটি ট্রেন ছাড়তে দেরি হচ্ছে। রংপুর এক্সপ্রেস সাত ঘণ্টা দেরিতে ছাড়বে। এজন্য রেলপথ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করছি।

নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, বাংলাদেশে পরিবহনের সক্ষমতার চেয়ে যাত্রী বেশি। অতিরিক্ত সক্ষমতা ব্যবহার করে যাত্রীদের সেবা দিচ্ছে রেলওয়ে। সার্বিকভাবে দায়িত্ব ভাগ করে দেয়া হয়েছে। ঈদের পাঁচদিন যাত্রী পরিবহন করতে সক্ষমতা অনুযায়ী সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। তিনি বলেন, আশা করছি শনিবার রংপুর এক্সপ্রেসে শিডিউল বিপর্যয় থাকবে না। কারণ রংপুর থেকে আলাদা ট্রেনের ব্যবস্থা করেছি, ওটা সময়মতো ঢাকা এসে পৌঁছাবে। রেলপথ মন্ত্রী বলেন, সফলতা ব্যর্থতা জনগণ বিচার করবে। তবে অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় রেল ভালো সেবা দিচ্ছে। ট্রেনের সংকট আগামী ঈদে থাকবে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কোরবানির ঈদের আগে আরও তিন-চারটি নতুন ট্রেন যোগ হবে। এছাড়া আগামী জুলাইয়ের মধ্যে আরও ৫০টি নতুন কোচ রেলে যোগ হবে। নতুন কোচ দিয়ে লালমনিরহাট ও রংপুর রুটে চালানো হবে।

দুর্ঘটনা এড়াতে স্টেশনে কোনো মই থাকবে না জানিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, কেউ যদি ছাদে যায়, তাহলে নিজ দায়িত্বে ঝুঁকি নিয়ে যাবে। এতে কোনো অঘটন ঘটলে রেল মন্ত্রণালয় দায় নেবে না। তিনি ছাদে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। ‘রংপুর এক্সপ্রেসে’র দেরি হওয়ার ব্যাপারে রেলপথমন্ত্রী বলেন, এটি যাত্রীরা অবগত আছেন। পরে অতিরিক্ত ট্রেন দিয়ে এই সমস্যাগুলো সমাধান করা হবে। এ সময় রেল সচিব মোফাজ্জেল হোসেন, রেলওয়ের মহাপরিচালক কাজী রফিকুল আলম ও কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ আমিনুল হকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, বরাবরের মতো এবারও শিডিউল বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে ট্রেনে ঈদযাত্রা। নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ছাড়ছে বিভিন্ন গন্তব্যের ট্রেন। ফলে যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। শুক্রবার রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন সকাল ৬টায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ট্রেনটি সোয়া ৮টায় স্টেশন ছাড়ে। উত্তরবঙ্গগামী রংপুর এক্সপ্রেস সকাল ৯টায় কমলাপুর রেলস্টেশন ছাড়ার নির্ধারিত সময় থাকলেও ট্রেনটি বেলা ১টার পরে ছেড়ে যাবে। লালমনি এক্সপ্রেস প্রায় ৭ ঘণ্টা দেরি করবে বলে স্টেশন সূত্র জানিয়েছে।

যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চট্টগ্রামগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে ছাড়ার নির্ধারিত সময় থাকলে কমলাপুর ছেড়ে যায় সকাল সোয়া ৮টায়। সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে ছাড়ার নির্ধারিত সময় থাকলেও ছেড়ে যায় সাড়ে ৭টায়। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন রংপুরগামী যাত্রীরা। ‘রংপুর এক্সপ্রেস’ ট্রেনটির কমলাপুর ছেড়ে যাওয়ার কথা সকাল ৯টায়। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেই ট্রেনটি দুপুরে স্টেশনে প্রবেশ করবে। অর্থাৎ পাঁচ ঘণ্টা স্টেশনে বসে পার করতে হবে ঈদে ঘরমুখো মানুষগুলোকে। তাদের স্টেশনে পরিবার-পরিজন নিয়ে এই গরমের মধ্যে কষ্ট করতে হচ্ছে।

ইনিউজ ৭১/এম.আর