হঠাৎ দেখলে তাকে জাতির জনক ভেবে ভুল হতেই পারে। আর টুঙ্গিপাড়ার মেঠোপথ বা মধুমতির তীর ধরে যদি হাঁটতে দেখা যায়, তবে তো কথাই নেই। চেহারা, পোশাক আর বেশভূষায় বঙ্গবন্ধু বলে ভুল করবেন যে কেউ। বলা হচ্ছে, বঙ্গবন্ধুকে মনে-প্রাণে ধারণ করা আরুক মুন্সীর কথা। বাকী গল্পটুকু জানাচ্ছেন আমাদের প্রতিনিধি রাজীব আহম্মেদ রাজু। জাতির জনকের একনিষ্ঠ ভক্ত আরুক মুন্সি। সুযোগ পেলেই ছুটে যান টুঙ্গিপাড়ায়, যেখানে কেটেছে বঙ্গবন্ধুর শৈশব, কৈশোরসহ জীবনের লম্বা সময়। আরুক মুন্সী দেখতে অনেকটা জাতির জনকের মতোই। আর যখন বঙ্গবন্ধুর মতো পোশাক পড়ে বের হন, তখন তাকে দেখতে ভিড় করেন সাধারণ মানুষ।
কাশিয়ানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মশিউর রহমান খান বলেন, বঙ্গবন্ধুর ছবি দেখলে মানুষের শিহরণ জাগে। আরুক মুন্সীকে দেখতে অনেকটা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতোই মনে হয়। বঙ্গবন্ধুর যৌবন বয়সে চেহারা প্রায় এ রকমই ছিল। যদিও বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কারো তুলনা চলে না। এরপরও নতুন প্রজন্মের যারা বঙ্গবন্ধুকে দেখেনি, তাদের কাছে আরুক মুন্সী বঙ্গবন্ধুর জীবন্ত এক ছবি। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার চেহারার যে মিল রয়েছে, তা সত্যিই যে কাউকে শিহরিত করবে। কাশিয়ানী উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার বাবর আলী বলেন, আমি হঠাৎ করে তাকে দেখে চমকে যাই। আমার কাছে তাকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি মনে হয়। তার চাল-চলন, পোশাক অনেকটা বঙ্গবন্ধুর মতোই।
কাশিয়ানীর কালনা এলাকার মিনা সুলতানা নামে বঙ্গবন্ধু ভক্ত এক নারী জানান, আমার কাছে বঙ্গবন্ধু মানে স্বাধীন বাংলাদেশের নাম। আমি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা ও গান লিখি। বঙ্গবন্ধুকে নিজ চোখে দেখার সৌভাগ্য আমার হয়নি। তবে, আমি যখন জানলাম জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর চেহারার সঙ্গে হুবহু মিল আছে আরুক মুন্সীর, তখন তার কাছে ছুটে আসি স্বচক্ষে দেখার জন্য। সত্যিই আমি অবাক হয়েছি তাকে দেখে। তিনি যেন বঙ্গবন্ধুর জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। জানা গেছে, গোপালগেঞ্জর কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত কামারোল গ্রামের এক মুসলিম পরিবারে ১৯৬৯ সালের ৬ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন আরুক মুন্সী। তিন ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে বসবাস করেন ঢাকার হাতিরপুল পাওয়ার হাউজ এলাকায়। ১৯৯৩ সাল থেকে গাড়ি চালক পদে চাকরি করেন ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীতে (ডিপিডিসি)। ৮ম শ্রেণি পাশ বলে নিয়মিত চাকরিতে পদোন্নতি পাননি তিনি।
তবে বঙ্গবন্ধুর চেহারার সঙ্গে তার মিল থাকায় তিনি যেখানেই গিয়েছেন, সব জায়গাতেই মানুষের ভালোবাসা পেয়েছেন। বঙ্গবন্ধু ভক্তদের আগ্রহ থাকে তাকে ঘিরে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাকে দেখতে ছুটে এসেছেন বঙ্গবন্ধু ভক্ত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এমনকি প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকেও তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন ভক্তরা। তার সঙ্গে ছবি তোলেন আগত ভক্তরা। এদিকে অনেকের মতেই, আরুক মুন্সি দেখতে অবিকল বঙ্গবন্ধুর মতো। যদিও তিনি নিজেকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তুলনা করতে নারাজ। আরুক মুন্সি মনে করেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় আর কোনো বঙ্গবন্ধু জন্মাবে না। তাই নিজেকে তিনি শুধু বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক বলেই ভাবেন। বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে চলতে চান। বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিজের অবস্থান থেকে কাজ করতে চান। গ্রামের মেঠো পথ আর মধুমতি নদী পাড়ের মানুষের সঙ্গে তার সখ্য আজীবনের। তাই তো সময় পেলেই ছুটে আসেন প্রিয় নদী মধুমতির তীরে। খোঁজ-খবর নেন গ্রামীণ জনপদের খেটে খাওয়া মানুষের।
তবে, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, শোষণ-নিপীড়ন পীড়া দেয় আরুক মুন্সিকে। বলেন, বঙ্গবন্ধু কখনোই এসব পছন্দ করতেন না। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি, স্বজনপ্রীতি বঙ্গবন্ধু চাইতেন না। বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখতেন সোনার বাংলা গড়ার। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আরুক মুন্সী স্বপ্ন দেখেন ও বিশ্বাস করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হবে।’
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।