
প্রকাশ: ১৫ মে ২০১৯, ২০:২২

সৎ জীবন-যাপন করবেন। তাই তিনি বেছে নেন শিক্ষকতা। এমন কি বিসিএসেও প্রথম পছন্দ ছিল সেটাই। তার বিশ্বাস ছিল এ পেশায় থেকেই দেশের জন্য, মানুষের জন্য বেশি কাজ করা সম্ভব। কিন্তু সেই পেশায় এসে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের মো. মাসুদুর রহমানকে। মাসুদুর পাবনা শহিদ বুলবুল সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক। পরীক্ষায় নকল করতে বাধা দেওয়ায় কেন্দ্রের মধ্যেই তাকে মারধর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এই ঘটনার একটি ভিডিও এরই মধ্যে ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
ঘটনার শুরু ৬ মে। এইচএসসি পরীক্ষার ডিউটি করছিলেন প্রভাষক মাসুদুর রহমান। সেসময় দেখতে পান তার কক্ষের দু’জন পরীক্ষার্থী অসদুপায় অবলম্বনের চেষ্টা করছে। তিনি তাদের খাতা কেড়ে নেন এবং নিয়মানুযায়ী যতটুকু দায়িত্ব পালন করা দরকার তা করেন। এতেই বাধে বিপত্তি। ঘটনার পর ৫ দিন চুপ করে থাকলেও গত ১২ মে এইচএসসি পরীক্ষা শেষে কেন্দ্র থেকে বের হবার পথে দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে প্রভাষক মাসুদুর রহমানের উপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
মাসুদুর রহমান বলেন: ‘আমি এইচএসসি পরীক্ষার ডিউটি শেষ করে কেন্দ্র থেকে মোটরসাইকেলে করে বাসায় ফিরছিলাম। তখন হঠাৎ পেছন থেকে আমাকে বলা হয় এই দাঁড়া। আমি দাঁড়ালে কয়েকজন মিলে আমাকে মারতে শুরু করে। সেসময় আমাকে বলা হয়; তুই আর কলেজে আসবি না কলেজে আসলে তোর হাত কেটে নেবো। বাংলা বিভাগে আগুন ধরিয়ে দেবো।’ ‘‘এরপর আমার সিনিয়র শিক্ষকরা এগিয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন এবং আমাকে বাড়ি চলে যেতে বলেন। এরপর থেকে আমার নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমাকে কিছুদিনের জন্য কলেজে যেতে মানা করেছেন শিক্ষকরা।’’


কলেজে রাখা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, কলেজ গেট থেকে মোটরসাইকেলে করে বের হওয়ার সময় কয়েকজন যুবক এসে অতর্কিত হামলা চালায় শিক্ষক মাসুদুর রাহমানের উপর। তাকে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি ও থাপ্পড় মারা হয়। ফেলে দেয়া হয় মাথার পাগড়িও। একপর্যায়ে তিনি বেরিয়ে যেতে চাইলে পেছন থেকে এসে তাকে লাথি মারে এক যুবক। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার একজন শিক্ষকের এ ধরনের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন অনেকেই।এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন প্রিয় এ শিক্ষকের ছাত্র-ছাত্রীরা। যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো শিক্ষকের এ ধরণের হেনস্থার সম্মুখীন হতে না হয়।
ইনিউজ ৭১/এম.আর