বরিশালের গৌরনদীতে নবম শ্রেণির এক মাদরাসাছাত্রীকে (১৫) দেখা করার কথা বলে ফ্ল্যাট বাসায় ডেকে বন্ধুদের নিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে প্রেমিক ও তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে মাদরাসাছাত্রীর মা বাদী হয়ে গৌরনদী থানায় মামলা করেছেন। এ মামলায় তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত প্রেমিকের দুই বন্ধুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- গৌরনদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী গাইবান্ধার সাদিক সরকার ও একই সেমিস্টারের শিক্ষার্থী শেরপুরের সরোয়ার হোসেন। তবে ঘটনার মূলহোতা প্রেমিক মো. শাওন পলাতক রয়েছে। পলাতক থাকায় শাওনকে গ্রেফতার করা যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। মামলার প্রধান আসামি শাওন একই কলেজের একই সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায়। তারা তিনজন বন্ধু। জানা যায়, গৌরনদী উপজেলা শহরে ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নিয়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে লেখাপড়া করে আসছিল তারা। নির্যাতিত কিশোরী উপজেলার শহরের একটি দাখিল মাদরাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী।
গৌরনদী থানা পুলিশের ওসি গোলাম সরোয়ার বলেন, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কয়েক মাস আগে মাদরাসাছাত্রী সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে শাওনের। এরপর দেখা করে তারা। গত ৭ ফেব্রুয়ারি শাওন তার প্রেমিকাকে ফোন করে উপজেলা শহরের জান্নাত মঞ্জিলের ভাড়া বাসায় দেখা করতে বলে। ওই বাসার একটি ফ্ল্যাটে তিন বন্ধু একসঙ্গে বসবাস করত। প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে প্রেমিকা ওই বাসায় আসলে গণধর্ষণ করে তিন বন্ধু। এ সময় গণধর্ষণের ভিডিও ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ১১, ১২ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি একইভাবে বাসায় ডেকে ছাত্রীকে গণধর্ষণ করে তিন বন্ধু। জান্নাত মঞ্জিলের মালিকের এ বিষয়ে সন্দেহ হলে তিন বন্ধুকে বাসা থেকে নামিয়ে দেয়। এরপর তারা উপজেলার নাঠৈ এলাকায় বাসা ভাড়া নেয়।
এরপর নাঠৈ এলাকার বাসায় আসতে মাদরাসাছাত্রীকে ফোন করা হয়। মাদরাসাছাত্রী যেতে অস্বীকার করলে ভিডিও ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। রবিবার রাতে মাদরাসাছাত্রী বিষয়টি তার মাকে জানায়। সোমবার সকালে মাকে নিয়ে গৌরনদী মডেল থানায় এসে পুলিশকে বিষয়টি জানায় ছাত্রী। সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা শহরের নাঠৈ অভিযান চালিয়ে দুই বন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় শাওন। সোমবার দুপুরে এ ঘটনায় নির্যাতিত ছাত্রীর মা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। প্রধান আসামি শাওনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ওসি সরোয়ার হোসেন আরও জানান, আসামি বাড়িতে যেন আত্মগোপন না করতে পারে সেজন্য গলাচিপা থানা পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।