পুলিশের সহযোগিতা কিংবা স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সহায়তা ছাড়া মাদক ব্যবসা চলতে পারে না জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, পুলিশের কেউ মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকলে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখুন, আমরা এসে টেনে নিয়ে যাব। রোববার বিকেলে রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে ডিএমপি আয়োজিত ‘মাদক ও জঙ্গি বিরোধী সমাববেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন। ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশের সহযোগিতা কিংবা স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সহযোগিতা ছাড়া মাদক ব্যবসা চলতে পারে না। পুলিশ যদি মাদকের আস্তানা থেকে চাঁদা তুলে, নেতারা যদি চাঁদা তুলে কিংবা সুবিধা নেয় তাহলে মাদক ব্যবসা বন্ধ করা যাবে না। স্থানীয়দের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, পুলিশের কোন সদস্য মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকলে তাকে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখবেন। আমরা এসে টেনে নিয়ে যাব। সাধারণ অপরাধীর মতো তার বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। ইতোমধ্যে অনেক পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ‘জনপ্রতিনিধি-স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে বলব, আপনারা দল ভারী করা জন্য বা অন্য যে কোন কারণে চোর-ছিনতাইকারী বা মাদক ব্যবসায়ীদের আশ্রয় দেবেন না। তাহলে আপনারাও রক্ষা পাবেন না।’
‘কেউ মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকলে, তার অবস্থান যাই হোক কোমরে দড়ি বেঁধে হুর হুর করে টেনে নিয়ে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাব’- বলেন তিনি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে মাদক নির্মূল করতে হবে মন্তব্য করে ডিএমপি কমিশনার বলেন: আমাদের ঐক্যবদ্ধ শক্তিকে কেউ দমাতে পারবে না, যারা মাদক নেয়, ব্যবসা করে, অর্থলগ্নি করে, আশ্রয় ও প্রশ্রয় দেয় তাদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, যারা মাদক বহন করে তারা গরীব মানুষ। কিন্তু যারা ব্যবসা করে, অর্থদাতা কিংবা আশ্রয় ও প্রশ্রয়দাতারা বড়লোক। সেসব প্রভাবশালীদের সহায়তা ছাড়া কোন গরীব মাদক বহন করতে পারে না। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, মাদকসহ কেউ ধরা পড়লে আদালতের মাধ্যমে তার জবানবন্দি নিয়ে আশ্রয়দাতা-লিডারকে সনাক্ত করে তাকে আইনের মুখোমুখি করা হবে।
মাদক ব্যবসায়ীদের কঠিন পরিণতির কথা উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন: লালবাগে হজরত আলী নামে এক কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী ছিলো। যার নামে ৩৩ টি মাদকের মামলা ছিলো। গত সপ্তাহে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সে মারা গেছে। মাদক ব্যবসায়ীদের একই পরিনতি ভোগ করতে হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। রমনা এলাকার এক মাদক ব্যবসায়ী পালিয়ে যাওয়ার সময় তার পায়ে গুলি করা হয়েছে। আমরা এতটুকু পিছপা হইনি। মাদক দমন করতে প্রয়োজনে একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত দশ বছরে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের কথা তুলে ধরে ডিএমপি কমিশনার আরো বলেন: এভাবে চলতে থাকলে আগামী ১০ বছর পর লাইনে দাঁড়িয়ে যাকাতের কাপড় নেওয়ার মানুষ থাকবে না। তবে সকল উন্নয়নই মাটি হয়ে যাবে যদি মাদক নির্মূল করতে না পারি। এখানে যদি ২-১ জন মাদক ব্যবসায়ী থাকেন তাহলে বলব তওবা করে মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিন। অন্যথায় স্থানীয় কমিটির সদস্যদের বলব, এরপরেও কেউ মাদকের সঙ্গে যুক্ত থাকলে তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে আমাদের খবর দিবেন। জঙ্গিদের কোমর ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে, তাদের কোমর সোজা করে আর দাঁড়ানোর সক্ষমতা নেই। এখন আসুন, যদি আমরা দেশকে ভালোবেসে থাকি তাহলে আসুন মাদককে উপড়ে ফেলি।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।