রাজৈর ইউএনও অফিসের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী মিজানুর রহমান। মাদারীপুর শহরে রয়েছে তাঁর ৪টি বাড়ি। পরিবহন ব্যবসায়ও লগ্নি করেছেন প্রচুর অর্থ। নিজের নামে ছাড়াও স্ত্রী ও স্বজনদের নামে বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন তিনি। চাকরির শুরুতে একেবারে শূন্য থেকে বিশাল বিত্তবৈভবের মালিক হওয়া এই তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মূদ্রাক্ষরিক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এর আগে তিনি মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। তৃতীয় শ্রেণির চাকরি করে কোটিপতি বনে যাওয়ার ম্যাজিক দেখিয়ে তিনি এখন মাদারীপুর জেলা ও রাজৈর উপজেলার সাধারণ মানুষের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। অদৃশ্য খুঁটির জোরেই তিনি বেপরোয়া। অনেক সময় তোয়াক্কা করেন না সিনিয়র কর্মকর্তাদেরকেও। এ নিয়ে অনেকে ক্ষুব্ধ হলেও ভয়ে মুখ খোলেন না কেউ। জানা গেছে, মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে চাকরির সময়ই মিজানের ভাগ্যোন্নয়ন শুরু হয়। এই সময় তিনি সরকারী সম্পত্তি লিজ দেওয়ার নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন বিপুল পরিমাণে টাকা। এ ছাড়াও সরকারি সম্পত্তি নিজের এবং আত্মীয় স্বজনদের নামেও লিজ নেন। এভাবেই তিনি মাদারীপুর শহরে গড়ে তুলেছেন ৪টি বাড়ি। যার বাজার মূল্য কয়েক কোটি টাকা। এ ছাড়াও ভাইদের রয়েছে শহরের বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা। এইসব ব্যবসায় তিনিই অর্থের জোগান দিচ্ছেন এমনটাই দাবি এলাকাবাসীর। এ ছাড়াও গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়নের শম্ভুক এলাকায় প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে মিজানের। তা ছাড়াও মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে পরিবহন ব্যবসায় যুক্ত হয়েছেন তিনি। মাদারীপুরে তার ট্রাক রয়েছে ৫টি এবং শরীয়তপুরে একাধিক গাড়ি রয়েছে তার।
অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, মাদারীপুর শহরের পাঠককান্দি এলাকায় তৃতীয় শ্রেণির এই কর্মচারীর একটি বাড়ি রয়েছে। এই বাড়িতেই তিনি থাকেন। এ ছাড়াও ভাড়া দেওয়া রয়েছে প্রায় ৫টি বাড়ি। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় কয়েক কোটি টাকা। জমির পরিমাণ ১৪ শতাংশ। শহরের স্টোডিয়ামের পিছনে ৮ শতাংশ জমির ওপরেও বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ করছেন মিজান। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, এই বাড়ির নির্মাণ কাজ তিন তলা পর্যন্ত হয়ে গেছে। জমিসহ এর বাজার মূল্য কমপক্ষে ৩ কোটি টাকা। এ ছাড়াও শহরের থানতলী এলাকাতে রয়েছে তাঁর একটি বাড়ি। এই বাড়িতে একাধিক ঘর রয়েছে। একটি ঘরে তার ছোট ভাই থাকেন। বাকি ঘরগুলো ভাড়া দেওয়া রয়েছে। তা ছাড়াওমাদারীপুর শহরের ইউ আই স্কুল সংলগ্ন এলাকায়ও তার একটি বাড়ি রয়েছে। এখানে জমি রয়েছে ১০ শতাংশ। এই বাড়িটি গড়ে তুলেছেন সরকারী জমির ওপর। তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মরত থাকাকালে আপন ভাইয়ের নামে লিজ নেন। এখানেও রয়েছে ৪-৫টি ভাড়াটিয়া। এই বাড়ির বাজার মূল্যও কোটি টাকার ওপরে। এই সম্পদের আয়ের উৎস সম্পর্কে মিজানুর রহমান বলেন, অনেক আগে কম মূল্যে আমি স্টেডিয়ামের পিছনে জমি কিনেছিলাম। সেই জমির দাম এখন বেড়েছে। ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বাড়ির নির্মাণ কাজ শুরু করেছি। এছাড়া থানতলী এলাকার বাড়ির জমিও অল্প টাকায় কিনেছিলাম। এখন জমির দাম বেড়ে গেছে। এগুলো আমার বেতনের টাকায় কেনা। আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চাকরি করি। তাছাড়া পাঠককান্দি এলাকার জমিটি সরকারি সম্পত্তি। আমার এক আত্মীয় ভোগ দখল করতো। পরে তারা ছেড়ে দেয়ায় আমার নামে লিজ নিয়েছি এবং ইউ আই স্কুল সংলগ্ন জমিটি আমার ছোট ভাইয়ের নামে লিজ নেওয়া। এ ছাড়াও কয়েকটি ট্রাক রয়েছে এগুলো আমার ভাইদের সাথে শেয়ারে কেনা। তিনি আরো জানান, আমার কোনো অবৈধ উপার্জন নেই।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।