আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও প্রতিযোগিতামূলক করতে নতুন নির্বাচনী আচরণবিধি প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নতুন বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা—যেখানে গুরুতর লঙ্ঘন প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করতে পারবে কমিশন। এছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড ও দেড় লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। দলের ক্ষেত্রেও একই পরিমাণ অর্থদণ্ড ধার্য করা হয়েছে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) রাতে ইসি সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত গেজেটটি প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়েছে, নির্বাচনী প্রচারণায় পোস্টার নিষিদ্ধ; তবে ব্যানার, বিলবোর্ড করা যাবে পরিবেশবান্ধব উপকরণ দিয়ে। একজন প্রার্থী তার আসনে সর্বোচ্চ ২০টি বিলবোর্ড ব্যবহার করতে পারবে, যার মাপ হবে দৈর্ঘ্যে ১৬ ফুট ও প্রস্থে ৯ ফুট। পলিথিন, পিভিসি ও রেকসিনজাত সামগ্রী ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রচারের সময় শব্দের মাত্রা সর্বোচ্চ ৬০ ডেসিবেল রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
প্রচার-প্রচারণায় যানবাহন শোভাযাত্রা, মশাল মিছিল, মোটরসাইকেল শোডাউন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচনের দিন এবং প্রচারকালে ড্রোন বা কোয়াডকপ্টার ব্যবহারের ওপরে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রচার নিয়ে নতুন বিধান
এবার প্রথমবারের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের জন্য পৃথক নির্দেশনা যুক্ত করা হয়েছে। প্রার্থী বা দলকে প্রচার শুরুর আগে তাদের ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেল, ইমেইল, আইডি ও অন্যান্য ডিজিটাল পরিচিতি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে হবে।
ঘৃণাত্মক বক্তব্য, বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট, এআই দ্বারা তৈরি ভুয়া ছবি/ভিডিও, কারো চরিত্র হনন বা জাতি-ধর্ম-লিঙ্গবিদ্বেষ উসকে দেওয়া সরাসরি দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
গুরুতর অপরাধে প্রার্থিতা বাতিল
ইসি জানিয়েছে, যে কোনো লঙ্ঘন নয়— বরং সংগঠিত, পরিকল্পিত বা ভোটের পরিবেশ বিনষ্টকারী লঙ্ঘনই গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং সেক্ষেত্রে প্রার্থিতা বাতিল করা হবে।
এছাড়া গণমাধ্যমের সংলাপ, সব প্রার্থীর এক মঞ্চে ইশতেহার ঘোষণা, ভোটার স্লিপ বিতরণে সীমাবদ্ধতা—এসবও নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছে কমিশন।