প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮:২৭
বাংলাদেশ বিশ্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রোল মডেল হিসেবে পরিচিত উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, পূজার সময় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বুক ফুলিয়ে সাহসের সঙ্গে দুর্গাপূজা উদযাপন করবেন এবং প্রশাসন সার্বক্ষণিকভাবে তাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে।
তিনি জানান, পূজার সময়ে যেকোনো ধরনের অপরাধের আশঙ্কা দেখা দিলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দেশে একটি হটলাইন চালু করা হচ্ছে, যাতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপন করতে পারেন এবং প্রশাসনের সহায়তা দ্রুত পাওয়া যায়।
আগামীকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সারাদেশের দুর্গাপূজা উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি জানান। সভায় নিরাপত্তা জোরদার, হটলাইন কার্যকর করা এবং পূজামণ্ডপগুলোর পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের নালাপাড়া সার্বজনীন দুর্গোৎসব উদযাপন পরিষদ আয়োজিত শ্রী শ্রী শারদীয় দুর্গোৎসব ২০২৫ উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, এই দেশ আমাদের সবার, তাই এখানে সব ধর্মের মানুষ একসঙ্গে মিলেমিশে থাকবে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য ধরে রাখবে।
তিনি আরও বলেন, আগে পূজার জন্য বরাদ্দ ছিল ২ কোটি টাকা, এবার সেটি বাড়িয়ে ৫ কোটি টাকা করা হয়েছে। সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মন্দির ও পুকুরঘাট নির্মাণের কাজ চলছে এবং ঢাকার খিলক্ষেতে মন্দিরের জন্য রেলওয়ের জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পাশেই একটি নতুন কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
ধর্ম উপদেষ্টা জানান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর পাশে সবসময় থাকতে চায় সরকার। তিনি বলেন, যারা সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন তারা কখনো মানবিক হতে পারে না, তাই সবাইকে হিংসা-বিদ্বেষ পরিহার করে মিলেমিশে কাজ করতে হবে যেন দেশ সত্যিকারের সোনার বাংলায় পরিণত হয়।
পূজার নিরাপত্তা নিয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, পূজামণ্ডপে স্থানীয়দের সম্পৃক্ত করতে হবে যাতে কেউ অপরাধ করার চেষ্টা করলে দ্রুত প্রতিরোধ করা যায়। তিনি জানান, সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে বদ্ধপরিকর।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন দক্ষিণ নালাপাড়া সমন্বয় পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লায়ন অসীত বরণ সেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সান্তু, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি দীপক কুমার পালিত, মন্দিরভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রমের সহকারী পরিচালক রিংকু কুমার শর্মা ও মন্দির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি অনিল পাল।