প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ১৮:৫৬
প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বর্তমান প্রক্রিয়া পরিবর্তনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি প্রাথমিক ঐকমত্য তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। মঙ্গলবার বিকেলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। তার বক্তব্য অনুযায়ী, সংবিধানের ৯৫(১) এবং ৪৮(৩) অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রশ্নে অংশগ্রহণকারী অধিকাংশ দল একমত পোষণ করেছে।
আলী রীয়াজ জানান, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতি নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো পুনর্বিবেচনা জরুরি। যদিও দুটি দল এখনো এই বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করছে, তবে কমিশন আশা করছে পরবর্তী বৈঠকে তাদেরও সমর্থন মিলবে। তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হলে বিচারপতি নিয়োগে বিদ্যমান একক নির্বাহী ক্ষমতা থেকে সরে আসা দরকার।’
এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়—দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠনের প্রস্তাব। আলী রীয়াজ বলেন, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ১০০ আসনের একটি উচ্চকক্ষ গঠনের পক্ষে মত দিয়েছে। যদিও কয়েকটি দল নীতিগতভাবে দ্বিমত পোষণ করেছে, তবুও তারা এটিকে পুনর্বিবেচনার যোগ্য একটি প্রস্তাব হিসেবে দেখছে।
দ্বিকক্ষ পার্লামেন্ট গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশে উচ্চকক্ষ একটি ভারসাম্য রক্ষাকারী ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে বিশ্লেষণ প্রয়োজন হলেও একটি বড় অংশ ইতোমধ্যে সম্মতি প্রকাশ করেছে।’
তিনি আরও বলেন, এই প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন একটি পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে, যাতে এসব সংস্কার প্রস্তাব ভবিষ্যতে আইন প্রণয়নের পর্যায়ে যেতে পারে। সব দলের মতামত নিয়ে আগামী বৈঠকে একটি খসড়া নীতিমালা উপস্থাপন করা হবে।
অংশগ্রহণকারী দলগুলোর প্রতিনিধিরা এ ধরনের গঠনমূলক সংলাপের প্রশংসা করে বলেছেন, রাজনীতির সংকট নিরসনে এসব আলোচনাই জাতির জন্য আশার আলো। তারা আশা করেন, কমিশনের মাধ্যমে একটি টেকসই ও গ্রহণযোগ্য সংস্কার প্রক্রিয়া সামনে এগিয়ে যাবে।
এই সংলাপে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে আরও কয়েকটি ইস্যু উত্থাপন করা হয়েছিল, যেগুলো পরবর্তী বৈঠকে বিশদভাবে আলোচিত হবে। সংলাপটি দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কাঠামো পুনর্বিন্যাসের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।