প্রকাশ: ২ জুন ২০২৫, ১৬:৩৩
দেশের ইতিহাসে ৫৪তম ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট ঘোষণা করলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট সোমবার (২ জুন) বিকেল ৩টা থেকে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে সম্প্রচার শুরু হয়।
বাজেট ঘোষণার পূর্বে, প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। দুপুর সাড়ে ১২টায় শেষ হওয়া এই বৈঠকে মোট ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাবনা অনুমোদিত হয়।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ও পরিচালন ব্যয়সহ মোট ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা থাকবে এডিপি খাতে এবং বাকি অর্থ পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় করা হবে।
রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের মোট জিডিপির ৯ শতাংশ। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি এবং অন্যান্য উৎস থেকে ৬৫ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের প্রস্তাব করা হয়েছে।
ঘাটতির পরিমাণ ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩ দশমিক ৬ শতাংশের সমান। এর মধ্যে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা দেশের অভ্যন্তরীণ উৎস এবং ১ লাখ ১ হাজার কোটি টাকা বিদেশি উৎস থেকে সংগ্রহ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বাজেটে ব্যয় খাতে উল্লেখযোগ্য কিছু বরাদ্দ হলো: বেতন-ভাতা ৯৭ হাজার কোটি টাকা, সুদ পরিশোধ ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা, বিদ্যুৎ ও সারের ভর্তুকিতে ১ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা।
জাতীয় সংসদ না থাকায় এবারের বাজেট আলোচনা বা বিতর্ক ছাড়াই সম্প্রচারিত হচ্ছে। তবে বাজেট ঘোষণার পর অর্থ মন্ত্রণালয় নাগরিকদের কাছ থেকে মতামত চাইবে, যা পরবর্তীতে বাজেটের চূড়ান্ত সংস্করণে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এ বছরের বাজেট ঘোষণা এসেছে একটু আগেভাগেই। পবিত্র ঈদুল আজহা ৭ জুন হওয়ায় ঈদের আগে বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় বাজেট–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। সেখানে গণমাধ্যমকর্মীরা অর্থ উপদেষ্টার কাছে প্রশ্ন করার সুযোগ পাবেন।
চূড়ান্ত অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতি একটি অধ্যাদেশ জারি করবেন এবং ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে দেশের নতুন অর্থবছরের বাজেট।