প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৫, ১৭:৫৯
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিতে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে বাংলাদেশ বিপাকে পড়েছে। তবে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালত এই শুল্ক কার্যকর করা স্থগিত করেছেন, যা দেশের ব্যবসায়ীদের জন্য কিছুটা স্বস্তির সৃষ্টি করেছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা, তেল ও গ্যাসসহ আরও বেশি পণ্য কেনার প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি নিক্কেই এশিয়ার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এই তথ্য জানান।
ড. ইউনূস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপ করছেন। তবে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমেরিকান পণ্য কেনার মাধ্যমে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা করছে। এর ফলে অন্য দেশ থেকে আমদানি কমিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেশি পণ্য সংগ্রহের পরিকল্পনা চলছে।
বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে গত অর্থবছরে ৬.৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে আড়াই বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। এর মধ্যে তুলার পরিমাণ ৩৬১ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ বছরে ৭.৯ বিলিয়ন ডলারের কাঁচা তুলা সংগ্রহ করে, যার বড় অংশ আসে ভারত ও মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে।
ড. ইউনূস জানান, যুক্তরাষ্ট্রের তুলা উৎপাদকেরা যদি বাংলাদেশের বাজারে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেন, তাহলে তারা ট্রাম্প প্রশাসনের কাছ থেকে রাজনৈতিক সুবিধা আদায় করতে সহায়ক হতে পারেন। তিনি আরও বলেন, আমেরিকার বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধি কংগ্রেস ও সিনেটে নির্বাচন হয়, যারা বাংলাদেশকে সমর্থন দিতে পারে।
বাংলাদেশ অধিকাংশ জ্বালানি তেল মধ্যপ্রাচ্য থেকে আমদানি করে থাকলেও ড. ইউনূস যুক্তরাষ্ট্র থেকেও এই পণ্য কেনা সম্ভব বলে জানান। তিনি অবশ্য উল্লেখ করেন, বাণিজ্য আলোচনার সময়সীমা ও শুল্ক কমানোর হার নিয়ে এখনও নিশ্চিত নন। তবে তিনি বলেন, এই পরিস্থিতিকে বাংলাদেশ হুমকি হিসেবে না দেখে একটি সুযোগ হিসেবে দেখছে।
গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শুল্ক কার্যকর করা বন্ধ করে দিয়েছে। আদালত উল্লেখ করেছে যে সংবিধান কংগ্রেসকে বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেয় এবং প্রেসিডেন্ট নিজে আইন বাতিল করতে পারেন না। এই রায় বাংলাদেশের বাণিজ্য ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।