
"চীনের প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে বেইজিং গেলেন অধ্যাপক ড. ইউনূস"
সাজিদ হিটলার , বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৫, ১৫:৪৩
শেয়ার করুনঃ

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বুধবার দুপুরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে বেইজিংয়ের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের বিশেষ ফ্লাইটে তার এই সফর শুরু হয়েছে। ২৬ থেকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত এই চারদিনের সফরে তিনি চীনের হাইনান প্রদেশে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার সম্মেলনে যোগ দেবেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে, ২৭ মার্চ বোয়াও ফোরামের উদ্বোধনী প্লেনারি সেশনে তিনি বক্তব্য রাখবেন। এছাড়া চীনের স্টেট কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রিমিয়ার দিং ঝুঝিয়াংয়ের সঙ্গে তার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হতে পারে। ২৮ মার্চ বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলসে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন ড. ইউনূস।
সফরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হবে ২৯ মার্চ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান। এদিন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতাও দেবেন। সফর শেষে তিনি চীনের একটি বিমানে ঢাকায় ফিরবেন বলে জানা গেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এ সফরে ছয় থেকে আটটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, এই সফরে কোনো চুক্তি সই হবে না। তবে চারটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা আসতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে এক থেকে দুই বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা এবং মোংলা বন্দরের আধুনিকায়নে অর্থায়নের বিষয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ সীমিত হওয়ায় বড় চুক্তি না হলেও পরবর্তী সরকারের জন্য পথ তৈরি হবে এই সমঝোতাগুলো।

পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন জানান, চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। স্বাস্থ্য, পানি ব্যবস্থাপনা, সামরিক সহযোগিতা এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা হবে। বিশেষ করে কুনমিংয়ের চারটি হাসপাতালকে বাংলাদেশি রোগীদের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। বাংলাদেশে চীনের একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার বিষয়েও আলোচনা হবে।
গত জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের পর দ্রুতই এই সফরকে কূটনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। তারা মনে করছেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর হিসেবে চীনকে বেছে নেওয়ার মধ্য দিয়ে বিশেষ রাজনৈতিক বার্তা দেওয়া হয়েছে। মানবসম্পদ উন্নয়ন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় এই সফরের অন্যতম লক্ষ্য হবে।

