নির্বাচন নিয়ে ইনিয়ে-বিনিয়ে কথা নয়, স্পষ্ট ঘোষণা চাই- সালাহউদ্দিন আহমেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: শনিবার ১লা মার্চ ২০২৫ ০৫:২৯ অপরাহ্ন
নির্বাচন নিয়ে ইনিয়ে-বিনিয়ে কথা নয়, স্পষ্ট ঘোষণা চাই- সালাহউদ্দিন আহমেদ

একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, চলতি মার্চ মাসের মধ্যেই নির্বাচন নিয়ে সুস্পষ্ট ঘোষণা আসতে হবে, অন্যথায় গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করবে। রাজধানীর কাকরাইলে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি অভিযোগ করেন, প্রধান উপদেষ্টা বিদেশি গণমাধ্যমে নির্বাচনের সময় সম্পর্কে ইঙ্গিত দিলেও দেশের জনগণের সামনে স্পষ্ট বক্তব্য দিচ্ছেন না। তিনি মনে করেন, সরকারের এই ধরণের কৌশলী অবস্থান গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রকে স্বাগত জানানো হলেও কিছু নতুন দলের কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ। গণপরিষদ গঠনের দাবি যারা তুলছেন, তারা মূলত দীর্ঘ সময়ের জন্য রাষ্ট্রক্ষমতা ধরে রাখার পরিকল্পনা করছেন।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে পিছিয়ে দিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করাটা জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নেওয়ার চেষ্টা। তিনি মনে করেন, যেসব রাজনৈতিক শক্তি জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে, তারা আসলে জাতীয় রাজনীতিতে নিজেদের দুর্বল অবস্থান বুঝতে পারছে।

তিনি বলেন, ২০২৪ সালের আন্দোলন কোনো স্থানীয় নির্বাচন ইস্যুতে হয়নি, বরং তা জাতীয় নির্বাচনের দাবিতেই হয়েছিল। সে আন্দোলনের চেতনা অনুযায়ী সব রাজনৈতিক শক্তিকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর তিনি জোর দেন।

বিএনপির এই নেতা মনে করেন, সরকার যদি প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আন্তরিক হতো, তাহলে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ঘোষণা অনেক আগেই আসত। কিন্তু নানা অজুহাতে সময় ক্ষেপণ করা হচ্ছে, যা রাজনৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য। তিনি বলেন, সরকার যদি সত্যিই গণতান্ত্রিক চর্চায় বিশ্বাসী হয়, তাহলে দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।

তিনি আরও বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনগণই সব সিদ্ধান্ত নেবে, কোনো বিশেষ মহলের পরিকল্পনা জনগণের মতামতের বাইরে থাকতে পারে না। অতীতে ভোটাধিকার হরণের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তা আর গ্রহণ করা হবে না। জনগণকে আস্থায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে।

এসময় তিনি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আরও সুসংগঠিত ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশের স্বার্থে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। কোনো দল বা গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষার জন্য রাজনীতি নয়, বরং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠাই মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।

তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, সময় এখনও আছে, দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। অন্যথায় দেশের জনগণ ও গণতান্ত্রিক শক্তি তাদের করণীয় ঠিক করবে। ক্ষমতায় থাকার স্বার্থে কৌশল নেওয়ার দিন শেষ, জনগণের মতামতই শেষ কথা।