মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও গাজা উপত্যকা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বৈঠকের সময় তিনি বলেন, গাজাকে জনশূন্য করে সেখানে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। তার মতে, ফিলিস্তিনিদের গাজা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়া উচিত কারণ সেখানে শুধু মৃত্যু আর ধ্বংসের ইতিহাস রয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, গাজার ভবিষ্যৎ নির্ধারণের জন্য বড় পরিকল্পনা দরকার এবং এটি এমন কিছু হওয়া উচিত যাতে ফিলিস্তিনিরা আর সেখানে ফিরে যেতে না চায়। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সেই অঞ্চল দখল করে সেখানে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায়, যা মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা আনতে পারে। তার দাবি, যারা এই পরিকল্পনা শুনেছেন, তারা একে ইতিবাচকভাবে নিয়েছেন।
গাজা যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে যখন আলোচনা চলছে, তখন ট্রাম্পের এমন বক্তব্য নতুন করে বিতর্ক তৈরি করেছে। ফিলিস্তিনিদের নিজেদের ভূমি থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনার কথা তিনি এর আগেও বলেছেন। গত জানুয়ারিতে তিনি গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের মিসর বা জর্ডানে স্থানান্তরের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র মিসর ও জর্ডানের জন্য অনেক কিছু করছে এবং এই দুই দেশ ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরে রাজি হতে পারে। তিনি আগে থেকেই গাজাকে খালি করার পরিকল্পনার কথা বলে আসছেন এবং তার মতে, এটি গাজার জন্য ভালো হবে।
তার মন্তব্যে ফিলিস্তিনি নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং একে গণহত্যার নতুন ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেছেন। তারা বলছেন, গাজা ফিলিস্তিনিদের জন্মভূমি, এটি দখলের কোনো ষড়যন্ত্র মেনে নেওয়া হবে না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও তারা এ ধরনের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি, তবে তার প্রশাসন আগে থেকেই গাজায় দখলদারিত্ব বজায় রাখার পরিকল্পনার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। গাজা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিন সংকটকে আরও জটিল করে তুলতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
ট্রাম্পের বক্তব্যকে অনেকেই ইসরায়েলের স্বার্থে নেওয়া পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। কারণ, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে দিলে সেখানে নতুন বসতি গড়ার সুযোগ পাবে ইসরায়েল। তবে এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।
গাজা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির কারণে বিশ্বজুড়ে সমালোচনা বাড়ছে। বিশেষ করে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, গাজাকে জনশূন্য করার পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। তবে ট্রাম্প প্রশাসন এখনও তার অবস্থান থেকে সরে আসার কোনো ইঙ্গিত দেয়নি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।