গোয়ালন্দে আগুন হতে স্কুল ছাত্রকে বাঁচালেন স্হানীয়রা, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যেতে বাঁধা

নিজস্ব প্রতিবেদক
মইনুল হক মৃধা-রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বুধবার ২৯শে জানুয়ারী ২০২৫ ১১:১৩ পূর্বাহ্ন
গোয়ালন্দে আগুন হতে স্কুল ছাত্রকে বাঁচালেন স্হানীয়রা, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যেতে বাঁধা

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে একটি বাড়িতে আগুন লাগার পর স্থানীয় যুবকরা সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে দশম শ্রেণির ছাত্র নিতুনকে উদ্ধার করেছেন। মঙ্গলবার বিকালে গোয়ালন্দ পৌরসভার জুড়ান মোল্লা পাড়ায় এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুনে দগ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়।  


স্থানীয়রা জানান, আগুন লাগার পর নিতুন ঘরের ভেতর আটকা পড়ে। আশপাশের মানুষ দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে স্থানীয় কয়েকজন যুবক ঘরের দেয়াল ভেঙে তাকে বের করেন। আগুনে দগ্ধ হয়েছেন আরও দুইজন, যাদের মধ্যে একজন নারী রয়েছেন। এছাড়া বড় একটি টিনশেড ঘর এবং ভাড়াটিয়াদের সমস্ত মালামাল পুড়ে যায়। প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  


ফায়ার সার্ভিসের দেরিতে পৌঁছানোর বিষয়ে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, অগ্নিনির্বাপক গাড়ি কাছাকাছি পৌঁছালেও একটি নির্মাণাধীন ভবন ও রাস্তায় ফেলা নির্মাণসামগ্রীর কারণে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ফিতা টেনে নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন এবং এক ঘণ্টারও বেশি সময় পর আগুন নেভাতে সক্ষম হন।  


গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা সাবেকুল ইসলাম জানান, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হলেও বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। স্থানীয়দের সহায়তায় শেষ পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।  


ঘটনার সময় বাড়ির মালিকসহ বেশ কয়েকজন ভাড়াটিয়া বাড়িতে ছিলেন। তবে মাত্র একটি প্রবেশপথ থাকায় অনেকেই দ্রুত বের হতে পারেননি। দগ্ধদের মধ্যে রয়েছেন ভাড়াটিয়া জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী সোমা বেগম এবং আরও একজন, যাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।  


পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। গোয়ালন্দঘাট থানার ওসি রাকিবুল ইসলাম জানান, আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে বিস্তারিত তদন্ত করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  


উদ্ধারকারী স্থানীয় যুবকদের একজন বলেন, নিতুনকে জীবিত উদ্ধার করতে পেরে তারা স্বস্তি বোধ করছেন। তবে বাড়ির প্রবেশপথের অব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। ফায়ার সার্ভিসের বিলম্ব ও রাস্তার প্রতিবন্ধকতার কারণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে গেছে বলে তারা মনে করছেন।