আবারো ট্রাম্পের হুমকি: কানাডাকে ৫১তম অঙ্গরাজ্য করার ইঙ্গিত

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৪শে জানুয়ারী ২০২৫ ১২:১৬ অপরাহ্ন
আবারো ট্রাম্পের হুমকি: কানাডাকে ৫১তম অঙ্গরাজ্য করার ইঙ্গিত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য বানানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে তিনি বলেন, কানাডা যদি যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে তাদের ওপর কোনো শুল্ক আরোপ করা হবে না। ট্রাম্প কানাডার প্রতি শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। তিনি বলেন, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কানাডা থেকে আমদানিকৃত সব পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।  


ট্রাম্পের বক্তব্য অনুযায়ী, কানাডার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ঘাটতি থাকবে না যদি তারা অঙ্গরাজ্য হওয়ার পথে এগিয়ে আসে। তিনি আরও বলেন, কানাডার কাঠ, তেল কিংবা গ্যাসের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নির্ভরশীল নয়। তিনি যুক্তি দেন যে, যুক্তরাষ্ট্র নিজের বন থেকে কাঠ সংগ্রহ করে এবং তেল ও গ্যাসের উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ।  


তবে কানাডা ট্রাম্পের এই হুমকির জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, সব ধরনের পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং এর জন্য সবকিছু আলোচনার টেবিলে রাখা হয়েছে। ট্রুডো আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের জবাবে কানাডাও তাদের স্বার্থ রক্ষায় দৃঢ় অবস্থান নেবে।  


ট্রাম্পের বক্তব্যে কানাডা থেকে আসা পণ্যের ওপর সম্ভাব্য শুল্ক আরোপের ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এমন বক্তব্য কেবল কানাডা নয়, পুরো আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থার জন্যই অস্বস্তিকর।  


যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি উৎপাদন প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, কানাডার গাড়ি আমাদের প্রয়োজন নেই, কারণ যুক্তরাষ্ট্র অনেক গাড়ি তৈরি করে। এ বক্তব্যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পের সক্ষমতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। একই সঙ্গে তিনি কানাডার প্রতি নির্ভরতা কমানোর বার্তা দিয়েছেন।  


এদিকে, ট্রাম্পের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কানাডা কঠোর অবস্থান নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। তাদের দাবি, ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত বাণিজ্যিক সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তারা পাল্টা শুল্ক আরোপ বা অন্যান্য অর্থনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে ইতিমধ্যে আলোচনা শুরু করেছে।  


বিশ্বব্যাপী এমন সময়ে ট্রাম্পের বক্তব্য এসেছে যখন যুক্তরাষ্ট্র ও তার বিভিন্ন বাণিজ্য অংশীদারের মধ্যে সম্পর্ক ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বিশেষ করে বাণিজ্য চুক্তি ও শুল্ক নীতির ক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রশাসন বেশ কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।  


অনেকে মনে করছেন, ট্রাম্পের বক্তব্য কেবল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং এটি বাস্তবায়ন করা কঠিন। তবে তার এই মন্তব্য দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জটিল করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  


যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্কের দীর্ঘদিনের ইতিহাস থাকলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন কারণে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে টানাপড়েন দেখা দিয়েছে। ট্রাম্পের এই বক্তব্য সম্পর্ককে আরও উত্তপ্ত করার আশঙ্কা বাড়িয়েছে।