কক্সবাজারের টেকনাফে সুপারি গাছের পরিত্যক্ত ডাল ও পাতা দিয়ে তৈরি পরিবেশবান্ধব বাসনপত্র ও খাবার পরিবেশনের সরঞ্জাম ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। আকর্ষণীয় এই বাসনপত্রগুলো সম্পূর্ণ পচনশীল, রাসায়নিকমুক্ত, স্বাস্থ্যকর ও সাশ্রয়ী। ‘প্লাস্টিকমুক্ত পৃথিবী গড়ি, সুপারি পাতার সাথেই চলি’ শ্লোগানে মনির এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান ২০২৩ সাল থেকে এই পরিবেশবান্ধব পণ্য তৈরি করছে। এনজিও সংস্থা কোডেক-এর নেচার এন্ড লাইভ প্রকল্প এই উদ্যোগে আর্থিক সহযোগিতা দিচ্ছে।
১৬ ডিসেম্বর টেকনাফ উপজেলা পরিষদ চত্বরে কুটির শিল্প মেলা-২০২৪-এ এই পণ্য ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অনেকে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য, আবার অনেকে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে এসব পণ্য কিনছেন। বিশেষ করে একবার ব্যবহারযোগ্য পণ্য হিসেবে পিকনিক, সেমিনার এবং হোটেল-রেস্তোরাঁতে এই পণ্য ব্যবহারের সুবিধা রয়েছে।
উদ্যোক্তা মনির আহমদ জানান, ইউটিউবে দেখে এই উদ্যোগের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি কোডেকের নেচার এন্ড লাইভ প্রকল্পের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাদের সহযোগিতায় ২০২৩ সালের শুরুতে সুপারি গাছের পাতা দিয়ে বাসনপত্র তৈরির কাজ শুরু করেন। তার প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে তিনটি ইঞ্জিন বা ডাইস রয়েছে, যা দিয়ে প্রতিদিন ২৫০-৩০০টি বাসনপত্র তৈরি করা সম্ভব।
এই বাসনপত্রগুলো দামে সাশ্রয়ী। একটি বড় প্লেট বা বাসন ৮-১০ টাকায় এবং ছোট বাটি ৪-৫ টাকায় বিক্রি হয়। পঁচনশীল হওয়ায় এই পণ্য যেখানে সেখানে ফেলে দিলেও পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় না। তবে পর্যটক কমে যাওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে চাহিদা কিছুটা কমে গেছে বলে জানান মনির আহমদ।
তিনি পরিবেশবান্ধব এই পণ্যের চাহিদা বাড়াতে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা চান। সেমিনার, বড় রেস্তোরাঁ, জিও-এনজিও এবং পর্যটন খাতে এর ব্যবহার বাড়ানো হলে এটি পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর ও সাশ্রয়ী পণ্যের চাহিদা পূরণ করতে পারবে।
টেকনাফ এলাকায় প্রচুর সুপারি গাছ ও বাগান রয়েছে। সুপারি পাতার এই বাসনপত্র স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে পরিচিত করতে পারলে শুধু পরিবেশ সুরক্ষাই নয়, অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।