প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১:১৫
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোববার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, “কেবল জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ড নয়, আমরা গত ১৫ বছরের সব অপকর্মের বিচার করব।” তিনি উল্লেখ করেন, গুম-খুনের মত অপকর্মের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
ড. ইউনূস বলেন, “আমরা গুমের তদন্তে একটি কমিশন গঠন করেছি এবং অক্টোবর পর্যন্ত ১ হাজার ৬০০ গুমের তথ্য পাওয়া গেছে। তবে কমিশন বিশ্বাস করে এই সংখ্যা ৩ হাজার ৫০০ ছাড়িয়ে যাবে।” তিনি আরও বলেন, গুমের শিকার হওয়া মানুষজনের সারা দেশের দেয়ালে-দেয়ালে লেখা কষ্টের গল্পগুলো শুনে তার হৃদয় কেঁপে উঠেছে।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, অভিযুক্তদের বিচার দেশের আদালতের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আদালতেও করা হবে। “এ জন্য ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিমিনাল কোর্টের প্রধান কৌঁসুলি করিম খানের সঙ্গে আলোচনা করেছি।” তিনি বলেন, “গুম, খুন ও হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার করা হবে, কোনো শক্তিশালী বাহিনী বা ব্যক্তি তাদের রক্ষা করতে পারবে না।”
ড. ইউনূস জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ফলকার তুর্কের সফরের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করতে জাতিসংঘ তাদের জনবল বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। এছাড়া, গুমের ঘটনায় নিয়মিত যোগাযোগ রাখার জন্য জাতিসংঘ তাদের রিপোর্ট ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে। তাদের চিকিৎসার ব্যয় সরকার বহন করবে।” শহীদদের স্মৃতি রক্ষায় ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ গঠন করা হয়েছে এবং সরকারের পক্ষ থেকে ১০০ কোটি টাকার অনুদান দেওয়া হয়েছে।
ড. ইউনূস ভাষণের শেষে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং বলেন, “আমি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছি শহীদদের, যাদের সাহসী লড়াই আমাদের মুক্তি দিয়েছে।”