বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছে নেপাল, যা দক্ষিণ এশিয়ায় একটি নতুন নজির স্থাপন করেছে। ১৫ নভেম্বর শুক্রবার ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী, ভারতের মাধ্যমে নেপাল প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে বিদ্যুৎ পাঠানো শুরু করেছে। এর মাধ্যমে ভারত ছাড়া তৃতীয় কোনো দেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করল হিমালয়ের দেশটি।
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এ উদ্যোগের সূচনা হয়, যেখানে জানানো হয় যে, বাংলাদেশকে মোট ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। চুক্তি অনুযায়ী, নেপাল একদিনের জন্য ২০২৪ সালে বিদ্যুৎ রপ্তানি করবে এবং ২০২৫ সালের ১৫ জুন থেকে পরবর্তী ৪ বছর ধরে প্রতি বছরের জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এই বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত থাকবে।
নেপাল বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র চন্দন কুমার ঘোষ জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে মাত্র একদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলেও ২০২৫ সাল থেকে এই বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়মিতভাবে শুরু হবে। ২০২৫ থেকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত প্রতি বছরের ১৫ জুন থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত নেপাল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে।
এখন পর্যন্ত নেপাল ভারতে বিদ্যুৎ রপ্তানি করছিল, কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যুৎ সম্পর্কের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার এ দুটি দেশ শক্তি সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। নেপাল প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ৮ দশমিক ১৭ রুপিতে বিক্রি করবে, এর মধ্যে ভারতের সঞ্চালন লাইনের খরচও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
এক্ষেত্রে, ভারত ও বাংলাদেশের বিদ্যুৎ গ্রিডের মধ্যে খুব বেশি বাড়তি ক্যাপাসিটি না থাকায়, নেপাল প্রথম পর্যায়ে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাঠাচ্ছে। তবে ভবিষ্যতে যদি সঞ্চালন লাইনের ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করা হয়, তাহলে নেপাল আরও বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে।
নেপালের জন্য এই রপ্তানি একটি বিশাল অর্জন, কারণ তারা অতিরিক্ত জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম। বর্ষাকালে যখন জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ বেড়ে যায়, তখন এই অতিরিক্ত বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে পারে। এর ফলে শুধু নেপালের অর্থনৈতিক লাভ হবে না, বরং বাংলাদেশও একটি নতুন শক্তি উৎসের সন্ধান পাবে।
এই চুক্তি দক্ষিণ এশিয়ার শক্তি সহযোগিতার জন্য এক নতুন মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, যেখানে নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশ একত্রে শক্তি ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।