রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছ থেকে আশানুরূপ সমর্থন না পাওয়ার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের (সিজিএস) সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তৌহিদ হোসেন বলেন, গত আট বছরে বাংলাদেশ যে সমর্থন প্রত্যাশা করেছিল, তা প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে পাওয়া যায়নি। তিনি জানিয়েছেন, "প্রতিবেশী কিংবা বৃহত্তর প্রতিবেশী দেশগুলো আমাদের প্রত্যাশার তুলনায় খুব বেশি সাহায্য করেনি।"
ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি জানান, চীন এবং ভারতের মতো শক্তিশালী দেশগুলোও রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে তেমন সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে না। তিনি বলেন, "চীন মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়, কারণ বঙ্গোপসাগরের গুরুত্ব এবং মিয়ানমারের ভূমি চীনের জন্য অপরিহার্য। একইভাবে, ভারতও কালাদান প্রকল্পের জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চায়।" ফলে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে, যা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আরও দীর্ঘসূত্রিতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়াও, তৌহিদ হোসেন রোহিঙ্গা তরুণদের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, "যে তরুণ প্রজন্মের সামনে ভবিষ্যতের কোনো সুযোগ নেই, তারা অবশেষে একটি বড় সমস্যা হয়ে উঠবে শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বরং আমাদের প্রতিবেশী এবং বিশ্বের জন্যও।"
উল্লেখযোগ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারে সহিংসতার মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তবে, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বিভিন্ন কারণে থেমে আছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এ প্রসঙ্গে বলেন, "এই সমস্যা যদি সমাধান না হয়, তা শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্ববাজারের জন্যও একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে।"
তিনি আশাবাদী যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দ্রুতই এই সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসবে, না হলে ভবিষ্যতে বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।