ঢাবিতে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক
উত্তম গোলদার
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:১৬ পূর্বাহ্ন
ঢাবিতে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা

ঢাকা, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে মো. তোফাজ্জল নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করে মারধর শুরু করে। পরে অবস্থার অবনতি হলে রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।


নিহত তোফাজ্জল বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাঠালতলি ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং মানসিক ভারসাম্যহীন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। শিক্ষার্থীরা জানান, ওইদিন হলের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলাকালীন তোফাজ্জল হঠাৎ হলে প্রবেশ করে। শিক্ষার্থীরা তাকে দুপুরে চুরি হওয়া ছয়টি মোবাইলের চোর সন্দেহে আটক করে।


প্রথমে তাকে হল ক্যান্টিনে নিয়ে খাওয়ানো হয়, পরে অতিথি কক্ষে নিয়ে মারধর করা হয়। আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।


ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ জানায়, তোফাজ্জলকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পরই মৃত ঘোষণা করা হয়। নিহতের পরিবারের কেউ না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জড়িতদের চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।


বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই ঘটনাকে নিন্দা জানিয়ে বলেন, চোর সন্দেহে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে এমনভাবে মারধর করা সমাজের জন্য একটি কলঙ্ক। তারা দাবি করেন, হল প্রশাসন ও প্রক্টরিয়াল টিমের অবহেলার কারণে এই ঘটনা ঘটেছে।


ফজলুল হক মুসলিম হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, "যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ক্যাম্পাসে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে।"


অধ্যাপক ড. শাহ মো. মাসুম বলেন, "ঘটনার তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে।"


প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ জানিয়েছেন, ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হবে এবং শৃঙ্খলার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, "এই ধরনের ঘটনা যেন ভবিষ্যতে না ঘটে, সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সচেষ্ট থাকবে।"


এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে এবং ন্যায়বিচারের প্রত্যাশায় তারা আন্দোলনেরও প্রস্তুতি নিচ্ছেন।