গ্রাম্য শালিশে মারধরের কারনেই নাজিম উদ্দীনকে হত্যা করে ঘাতক

নিজস্ব প্রতিবেদক
রিফাত হোসাইন সবুজ, জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ
প্রকাশিত: বুধবার ১২ই জুন ২০২৪ ০৬:৩৭ অপরাহ্ন
গ্রাম্য শালিশে মারধরের কারনেই নাজিম উদ্দীনকে হত্যা করে ঘাতক

নওগাঁ সদর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বিলভবানীপুর গ্রামের গ্রাম্য মাতব্বর নাজিম উদ্দীন ফকির (৬২)  হত্যার ঘটনায়  ২ জনকে গ্রেফতার করেছে নওগাঁ সদর থানা পুলিশ। বুধবার  (১২ জুন) বেলা ১১ টার দিকে নওগাঁ  সদর মডেল থানা চত্বরে সংবাদ সম্মেলনে বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ গাজিউর রহমান, পিপিএম (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত)।


এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে শহরের দপ্তরীপাড়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।


গ্রেপ্তারকৃতরা  হলেন- সদর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়ন এর বিল ভবানীপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে মো: সুজাত আলী ( ৩২)  এবং রঘুনাথপুর গ্রামের মো: নজরুল ইসলামের ছেলে মো: মেহেদি হাসান ( ২৮) ।


সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান বলেন-  গত ১০ জুন রাত ১১ টার দিকে বিলভবানীপুর শুকুরের মোড় হতে নাজিম উদ্দিন ফকির (৬০) মোটরসাইকেল নিয়ে বিলভবানীপুর মৎসজীবি পাড়ায়  মোঃ একলাস এর বাড়ীতে স্থানীয় শালিশ দরবার করার জন্য যান। শালিস দরবার শেষে বাড়ী ফেরার সময় ১১ টা ৪০ মিনিটের দিকে  বাড়ীর প্রবেশ পথে  আসামীরা ধারালো অস্ত্র ও হাতুড়ি দিয়ে বুকের নিচে মাঝখানে, বুকের নিচে বাম পাশে, পেটের বাম পাশে, পেটের ডান পাশে ও ডান বাহুতে আঘাত করে গুরুতর জখম করলে, ভিকটিমের ডাক-চিৎকার ও গোঙ্গানো শব্দ শুনে বাড়ীর ভিতর তার ছেলে, স্ত্রীসহ আত্মীয় স্বজন বের হয়ে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পান।  পরে তাকে চিকিৎসার জন্য ভ্যানযোগে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে, কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।


কি কারনে এমন হত্যাকান্ড ঘটনো হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন-  প্রায় ৩ বছর পূর্বে  স্থানীয়  এক নাপিতকে মারধরের অপরাধে গ্রাম্য সালিশ বসিয়ে মাতব্বর নাজিম উদ্দিনসহ বেশ কয়েক জন মাতব্বর  সুজাত আলীকে মারধর ও নগদ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।  সে রাগ পুষিয়ে রেখে বিয়ে না করেই অবিবাহিত থেকেই পরিকল্পনা করেন মাতব্বরকে হত্যা করার। এর পর সুজাতের  বন্ধু মেহেদী হাসানকে নিয়ে এই হত্যাকান্ডের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা  হত্যাকন্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও হাতুড়ি ক্রয় করে তাকে হত্যা করে।


তিনি আরও বলেন, গ্রাম্য সলিশ একটি অবৈধ প্রথা। আমরা চেষ্টা করছি যেখানেই গ্রাম্য সলিশ প্রথা বন্ধ করতে। এ জন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। আসামীরা যাতে শাস্তি পায় যেজন্য সকল তথ্য-প্রমান সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।


এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিতি ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( সদর সার্কেল ) ফৌজিয়া হাবিব খান, নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) জাহিদুল হক এবং  পুলিশ পরিদর্শক ( তদন্ত ) আব্দুল গফুর।