পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গলের (পিআরবি) সংশোধিত নতুন নিয়মে বাংলাদেশ পুলিশে ক্যাডেট উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও সার্জেন্ট নিয়োগ দেওয়া হবে।
পদের নাম ও সংখ্যা:
এসআই ও সার্জেন্ট নেয়ার সংখ্যা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। অবসরজনিত শূন্যপদসহ মোট পদ হিসাব করে এর সংখ্যা চূড়ান্ত করা হবে। প্রথমে এসআই ও পরে সার্জেন্ট নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে জানা গেছে পুলিশ সদরদপ্তর থেকে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকে মোট ১১টি ধাপ অনুসরণ করে একজন যোগ্য প্রার্থী বাংলাদেশ পুলিশের সদস্য হিসেবে নিয়োগ পাবেন।
আবেদনের যোগ্যতা
এসআই পদে সংশোধিত বিধিতে ন্যূনতম উচ্চতা নির্ধারণ করা হয়েছে পুরুষ ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি ও নারী ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। যা আগে ছিল যথাক্রমে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি ও ৫ ফুট ২ ইঞ্চি। সার্জেন্ট পদে পুরুষের উচ্চতা কমপক্ষে ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি আর নারীর ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি।
উচ্চতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কম্পিউটারের এমএস ওয়ার্ড, এক্সেলসহ বিভিন্ন প্রোগ্রাম জানা, বাংলা, ইংরেজি, অঙ্ক ও সাধারণ জ্ঞানে লিখিত পরীক্ষায় ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নম্বর পাওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এছাড়াও মামলা তদন্তের ক্ষেত্রে প্রার্থীর শারীরিক সক্ষমতার পাশাপাশি কৌশলগত জ্ঞান, প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতার বিষয়টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে কম্পিউটার তথা এমএস অফিস, ইন্টারনেট, ট্রাবল শুটিং ইত্যাদিতে সম্যক জ্ঞান ও দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। অপরাধের ধরন পরিবর্তনের কারণে অপরাধের প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন ও আসামি গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে হয়। এক্ষেত্রে একজন প্রার্থীকে যেসব বিষয় যাচাই করার তা ২৫ নম্বরের মধ্যে সম্ভব নয়, তাই মনস্তত্ত্বের লিখিত পরীক্ষার নম্বর ৫০ করা হয়েছে।
আবেদনকারীর উচ্চতা বিবেচনায় ৪৫ শতাংশ, এসএসসি বা সমমানের ভালো ফল বিবেচনায় ১৫ শতাংশ, এইচএসসি বা সমমানের ভালো ফল বিবেচনায় ১৫ শতাংশ এবং ডিগ্রি অথবা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতার ভালো ফল বিবেচনায় অন্য ২৫ শতাংশ প্রার্থী বাছাই করা হবে। সাধারণ কোটায় কোনো প্রার্থীর উচ্চতা ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি হলে সর্বোচ্চ ৫০ পয়েন্ট পাবে।
৫ ফুট সাড়ে ৯ ইঞ্চি হলে ৪৭.৫ পয়েন্ট, ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি হলে ৪৫ পয়েন্ট, ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি হলে ৪০ পয়েন্ট, ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি হলে ৩৫ পয়েন্ট, ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি হলে ৩০ পয়েন্ট পাবে। একইভাবে এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফলে ন্যূনতম জিপিএ ২.৫ হলে ৩০ পয়েন্ট এবং সর্বোচ্চ ৪.৫ বা তারও বেশি হলে ৫০ পয়েন্ট প্রাপ্ত হবে।
আবেদনের নিয়ম:
এসআই পদের জন্য দরখাস্ত করতে হবে পুলিশ সদরদপ্তরের ওয়েব পোর্টালে অথবা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে।
সংশোধনীতে বলা হয়, উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক রেঞ্জেস থেকে শারীরিক মাপ নেওয়া হবে। এর মধ্যে উচ্চতা, বুক (পুরুষ প্রার্থীদের), ওজন ও শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্র যাচাই-বাছাই, সহনশীলতা পরীক্ষা এবং প্রচলিত দৌড় (৭ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে পুরুষ ১৬০০ মিটার, নারী ৭ মিনিটের মধ্যে ১০০০ মিটার), লম্বা লাফ (পুরুষ ৩ দশমিক ৫ ফুট এবং নারী ২ দশমিক ৫ ফুট), ওপরে তুলে ধরা (পুরুষ ৪০ সেকেন্ডে ১৫ বার এবং নারী ৩০ সেকেন্ডে ১০ বার), সিট অ্যাপ (পুরুষ ৪০ সেকেন্ডে ১৫ বার এবং নারী ৩০ সেকেন্ডে ১০ বার), টানা (পুরুষ ৩০ ফুট ১৬০ পাউন্ড, নারী ২০ ফুট ১২০ পাউন্ড) এবং দড়ি বেয়ে ওপরে ওঠা (পুরুষ ১২ ফুট এবং নারী প্রার্থীর ক্ষেত্রে ৮ ফুট)।
সারা দেশে পরীক্ষা নেয়ার জন্য এসপি পদের নিচে নয় এমন কর্মকর্তাদের দিয়ে পুলিশ সদরদপ্তর প্রশ্নপত্র তৈরি করবে। ১০০ নম্বরের পৃথক দুটি প্রশ্নপত্র থাকবে। পরীক্ষার নির্ধারিত সময় ৩ ঘণ্টা। এতে ইংরেজি ও বাংলা রচনা ছাড়াও সাধারণ জ্ঞান ও অঙ্ক থাকবে। এছাড়াও নতুন নিয়মে থাকছে ৫০ নম্বরের মানসিক পরীক্ষা। আগামী নভেম্বরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।