খাদ্যমন্ত্রী বীরমুক্তিযোদ্ধা সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি বলেছেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সকল কর্ম ও সাহিত্য সব সময় বাঙ্গালী জাতির জন্য এক বড় অনুপ্রেরণা। শুধু বাঙ্গালীই নয় বিশ্বের কাছে সাধনা ও চর্চার নামই হচ্ছে বরীন্দ্রনাথ ঠাকুর। “আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি... ”এই চরণ লেখনীর মাধ্যমেই প্রমাণ করে যে বরীন্দ্রনাথ বাংলাকে কত ভালোবাসতেন। তার গুনকীত্তন করে শেষ করা যাবে না। বাংলা ও বাঙালির প্রাণের মানুষ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শিল্প সাহিত্যের প্রতিটি ধারায় অনবদ্য অবদান রেখে তিনি সমৃদ্ধ করেছেন বাংলা সাংস্কৃতিক পরম্পরাকে। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, কথাশিল্পী, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, সংগীত রচয়িতা, সুর¯্রষ্টা, গায়ক, চিত্রশিল্পী, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক।
তিনি আরো বলেন বাংলার নবজাগরণ কালের অন্যতম পথিকৃৎ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টি যুগে যু্গে প্রেরণা যুগিয়েছে। সৃষ্টিশীলতার সমান্তরালে তিনি ধর্ম, দর্শন, রাজনীতি ও সমাজভাবনা সমানভাবেই চালিয়ে গেছেন। সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী তিনিই প্রথম এশীয় ও একমাত্র বাঙালি লেখক। গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যা এই উপমহাদেশের মানুষের জন্য বড় একটি অর্জন।
তিনি রবিবার নওগাঁর আত্রাই উপজেলার রবীন্দ্র কাচারী বাড়ি পতিসরে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে দিনব্যাপী গৃহিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে এই কথাগুলো বলেন। করোনার কারনে দীর্ঘ দুই বছর বন্ধ থাকার পর কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন উপলক্ষে কবিগুরুর নিজস্ব জমিদারি তার স্মৃতি বিজড়িত নওগাঁর পতিসর কাচারি বাড়ি প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় নওগাঁ জেলা প্রশাসন।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে কাচারি বাড়ির দেবেন্দ্র মঞ্চে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বদলগাছী) আসনের সংসদ সদস্য ছলিম উদ্দিন তরফদার, নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. আনোয়ার হোসেন হেলাল, পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া, রবীন্দ্র গবেষক ড. আশরাফুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. পিএম সফিকুল ইসলাম, বরেন্দ্র গবেষক জাদুঘর রাজশাহীর পরিচালক প্রফেসর ড. আলী রেজা আব্দুল মজিদ, নওগাঁ সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামছুল আলম প্রমুখ। এছাড়াও জেলা, উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, জেলা আওয়ামীলীগ, রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলা আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং গন্যমান্য ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
১৬১ বছর আগে, ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫শে বৈশাখের এই দিনে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ মহান এই বাঙালি মনীষী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বিশ্ব বাঙালির সম্ভাবনা, দুঃসময়ে এখনো সবচেয়ে বড় ভরসার জায়গা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তার এই জন্মবার্ষিকীতে পতিসরে নামে রবীন্দ্রভক্তের ঢল। পরিণত হয় মানুষের মহামিলন মেলায়। সরকারিভাবে একদিনের কর্মসূচি নিলেও এ মিলনমেলা চলে প্রায় পুড়ো সপ্তাহজুড়ে। দূর-দূরান্ত থেকে কবিভক্তরা ছুটে আসেন তাদের প্রিয় কবির পতিসর কাছারি বাড়ি প্রাঙ্গণে। একে অপরের সান্নিধ্যে এসে স্মৃতিচারণে লিপ্ত হন কবিভক্তরা।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।