যুবদল নেতা তৌহিদুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনায় সেনা কমান্ডার প্রত্যাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক
শফিউল আলম রাজীব, জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লা
প্রকাশিত: শনিবার ১লা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৩:৩১ অপরাহ্ন
যুবদল নেতা তৌহিদুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনায় সেনা কমান্ডার প্রত্যাহার

কুমিল্লায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে যুবদল নেতা মো. তৌহিদুর রহমানের মৃত্যুর পর সেনাবাহিনী কমান্ডারকে প্রত্যাহার করেছে। গত ৩১ জানুয়ারি কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলা থেকে তাকে আটক করা হয়েছিল। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু ঘটে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই ঘটনা তদন্তে উচ্চপদস্থ কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। 


বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, তৌহিদুর রহমানকে কুমিল্লা শহরের একটি শিপিং এজেন্টের কর্মী হিসেবে পরিচিত। তার বাবার মৃত্যুর পর বাড়িতে ফিরেছিলেন এবং তার বাবার কুলখানি উপলক্ষে তার পরিবারে শোকের মাতম চলছে। তার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, সেনাবাহিনী তার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ ছাড়া তাকে আটক করে। 


তৌহিদুরের ভাই আবুল কালাম সংবাদমাধ্যমে জানান, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সেনাবাহিনীর তিনটি গাড়ি বাড়ির সামনে এসে তৌহিদুর রহমানকে অস্ত্র থাকার অভিযোগে তুলে নিয়ে যায়। তার পরিবারের দাবি, তৌহিদুর কখনই অস্ত্র ব্যবহার করতেন না এবং তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন। 


প্রায় ১২ ঘণ্টা পর পুলিশ জানায়, তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তবে সেখানে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার শরীরে আঘাতের চিহ্নের কথা জানান। তৌহিদুরের পরিবার এবং স্থানীয়রা দাবি করেছেন, তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। 


এদিকে, বিএনপি ও দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ফেসবুকে পৃথক পোস্টে এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বিচার দাবি করেছেন। বিএনপি নেতারা সেনাবাহিনীর জড়িত সদস্যদের শাস্তি নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন। 


তৌহিদুর রহমান কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন এবং তাকে দলের একটি গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে জানতেন সবাই। 


সরকারের পক্ষ থেকে এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং শিগগিরই এর সঠিক কারণ জানা যাবে। তদন্তে প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। 


এ ঘটনা কুমিল্লার রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং দেশের সাধারণ জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। যদিও সেনাবাহিনী তদন্তের মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহা করার আশ্বাস দিয়েছে, তবুও তৌহিদুরের পরিবারের পক্ষ থেকে ন্যায়বিচারের দাবি জোরালো হচ্ছে। 


তৌহিদুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনাটি কুমিল্লার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন প্রশ্ন তোলেছে। এবিষয়ে সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া না এলে বিষয়টি আরও বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে চলে যেতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।