বিভাগীয় শহর বরিশালে অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং জনবসতি এলাকায় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কারনে মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। স্বাস্থ্যগতভাবে চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এ শহরের অধিকাংশ মানুষ। নিরাপদ দূরত্বে সুনির্দিষ্ট স্থানে শিল্প স্থানান্তরের গণমানুষের যে দাবী তা এখনও উপেক্ষিত। ইটিপি স্থাপন হলেও তা যথাযথ কার্যকরের উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। শতাধিক সবুজ, কমলা ও লাল শ্রেনীভুক্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান বরিশালের জনবসতি এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে। ফলে মুখ থুবরে পড়েছে বরিশালের বর্তমান পরিবেশ ব্যাবস্থা।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি “বেলা” বরিশালের আয়োজনে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত “বরিশালের শিল্প দূষণ এবং নিয়ন্ত্রনে করণীয়” শীর্ষক কমিউনিটি সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।
এসময় বক্তারা আরো বলেন, জনবসতি এলাকায় গড়ে তোলা এ সব শিল্প প্রতিষ্ঠান একদিকে যেমন মানুষের স্বাহ্যঝুঁকির মাত্রা বাড়িয়ে চলেছে পাশাপাশি বায়ু, পানি, মাটি ও পরিবেশ-প্রতিবেশ ব্যবস্থাও সংকটের মুখে ফেলেছে। বিশেষ করে ৮টি ঔষধ শিল্প প্রতিষ্ঠান তাদের ইটিপি সার্বক্ষনিক কার্যকর না রাখায় নদী খালের পনির দূষণসহ শহরের পরিবেশ মারাত্মকভাবে বেড়েই চলেছে। কেউ নদীর জায়গা দখল করে নদীর গতিপথের পরিবর্তন ঘটিয়েছে। পদ্মা সেতু চালুর সাথে সাথেই বরিশাল অঞ্চলে অনেক শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় এখনই নির্দিষ্ট একটি জোন তৈরী করে সেখানে সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের উদ্যোগ এখনই গ্রহণ করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট দফতরসমূহকে আইন ও পরিবেশ বিরোধী কর্মকান্ডে বিরুদ্ধে যথাযথ কার্যকর ভূমিকায় দায়িত্ব পালন করতে হবে।
বেলা’র নেট মেম্বার প্রফেসর শিবানী চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেলা’র নেট মেম্বার মোঃ রফিকুল আলম।
সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন, শিল্প প্রতিষ্ঠান সমূহকে ব্যবস্থাপনার মধ্যে নিয়ে আসতে না পারার কারনে আজ আমাদের এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। “আমরা আমাদের পরিবেশ ব্যবস্থা যদি টিকিয়ে রাখতে না পারি তবে সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হবো। ক্ষতিগ্রস্ত হবে নদী, খাল, পানি, মাটি, বায়ু ও জীববৈচিত্রসমূহ। পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি আমাদের শিল্পকেও টিকিয়ে রাখতে হবে তবে তা পরিবেশ আইনের মধ্যে থেকে পরিচালিত হতে হবে, মানুষের ক্ষতি করে নয়। একটি সুন্দর পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে নতুন প্রজন্মকে সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে কাজ করতে হবে এবং এতে আমাদের সকলের সহযোগীতা থাকবে। আমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমাদেরই কাজ করে যেতে হবে। সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেলার বিভাগয়ী সমন্বয়কারী লিংকন বায়েন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে মতামত ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন শুভংকর চক্রবর্তী, রনজিত দত্ত, হাসিনা বেগম নীলা, হাদিউজ্জামান, নাসির উদ্দিন, সুপ্রিয় দত্ত, এনায়েত মোল্লা প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।