নাটোরের লালপুর উপজেলায় পদ্মা নদীর চরাঞ্চলের কৃষকরা দু’দফা বন্যার ক্ষতির পর আবারও সবজি চাষে ফিরেছেন। পদ্মার পলিমাটি মিশ্রিত উর্বর জমিতে চাষীরা এখন শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত। তাদের লক্ষ্যে, এই মৌসুমে লাভের স্বপ্ন, যাতে কৃষকদের নতুন করে উন্নতির পথ খোলা রয়েছে।
গত বন্যায় পদ্মা চরের প্রায় ৫০৬ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি, মাসকালাই ও আখের জমি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। তবে পানি নেমে যাওয়ার পর জমিগুলো আবার চাষের উপযোগী হওয়ায় কৃষকরা ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য নতুন করে সবজি চাষ শুরু করেছেন। বর্তমানে, চরের কৃষকরা পেঁয়াজ, রসুন, মটরশুঁটি, গাজর, ফুলকপি, শিম, টমেটো, বাঁধাকপি সহ নানা ধরনের শাকসবজি চাষ করছেন।
কাহার সিদ্দিক নামে একজন কৃষক জানান, তিনি দু’দফা বন্যায় প্রায় আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি করেছেন। তবে এখন তিনি ফুলকপি ও গাজরের চাষ করছেন এবং বাজারে ভালো দাম পেলে ক্ষতির কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশা করছেন।
এছাড়া, কৃষক মাহাবুবুর রহমান জুয়েল বলেন, বন্যার আগে তার বেগুন, গাজর, মূলা ও ফুলকপির জমি নষ্ট হয়ে গেছে। তবে এখন তিনি আবারো পেঁয়াজ, গাজর ও ফুলকপির চাষ করছেন।
এদিকে, লালপুর উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, বর্তমানে ১২৪ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ শুরু হয়েছে, যার মাধ্যমে প্রায় ২ হাজার ৫৬০ মেট্রিক টন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর বাজারমূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা হতে পারে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় জানান, কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা এবং তদারকি করা হচ্ছে। কৃষকরা এখন নিজের প্রচেষ্টায় আগের ক্ষতি পুষিয়ে আয়ের পথে ফিরে আসছেন, যা তাদের জীবনে নতুন আশার আলো জ্বালিয়েছে।
এই সবজি চাষের মাধ্যমে শুধু চরের কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন না, বরং লালপুর ও তার আশপাশের এলাকার চাহিদাও পূর্ণ হচ্ছে, যা অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।