আমের মধ্যে যেন কোনো ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক প্রয়োগ করতে না পারে সে বিষয়টি দেখতে আমবাগানে পুলিশ মোতায়েনের নির্দেশনা দিয়ে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এ আবেদন করা হয় বলে নিশ্চিত করেন রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। এর আগে গত ৯ এপ্রিল আমের মধ্যে যেন কোনো ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক প্রয়োগ করতে না পারে সে বিষয়টি দেখার জন্য রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আমবাগানে পুলিশ মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সাতদিনের মধ্যে রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার ও ডিআইজিকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।
এ ছাড়া ফলের বাজার ও আড়তে আমসহ অন্যান্য ফলে রাসায়নিক মেশানো বা ব্যবহার বন্ধ হচ্ছে কিনা তা নজরদারি করতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও র্যাবের সমন্বয়ে একটি পর্যবেক্ষণ টিম গঠন করতে বলা হয়। পুলিশের আইজি, বিএসটিআই, র্যাবের মহাপরিচালককে এ আদেশ বাস্তবায়ন করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এক রিটের সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে ৯ এপ্রিল হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ এবং রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম। আমের মৌসুমকে সামনে রেখে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষতিকর রাসায়নিকের প্রয়োগ ঠেকাতে রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বড় আমবাগানে পুলিশ মোতায়েনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুনঃ আমের বাগান পাহারায় যাচ্ছে পুলিশ
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আইজিপি, র্যাব মহাপরিচালক, বিএসটিআইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (কেমিক্যাল টেস্টিং উইং) দেশের বড় বড় ফলের বাজার ও আড়তে মনিটরিংয়ে টিম গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজিকে পুলিশ মোতায়েনের নির্দেশ দেয়া হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাজশাহী অঞ্চলসহ দেশের যেসব জেলায় বড় আমবাগান রয়েছে, সেখানে পুলিশের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনকে মনিটরিং টিমে যুক্ত হওয়ার নির্দেশনাও রয়েছে এ-সংক্রান্ত ২০১২ সালের রায়ে।’ মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘আগামী এক মাসের মধ্যে আদেশ বাস্তবায়ন করে শিল্প সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, খাদ্য সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বিএসটিআইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, র্যাবের মহাপরিচালক, বিএসটিআইয়ের পরিচালক (কেমিক্যাল টেস্টিং উইং), রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি এবং এনবিআর চেয়ারম্যানকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’
২০১২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে মনজিল মোরসেদের করা এক রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট এ রায় দেন। রায়ে সাত দফা নির্দেশনা দেয়া হয়। সেখানে আমের মৌসুমে রাসায়নিক ব্যবহার বন্ধ এবং একটি পর্যবেক্ষণ টিম গঠন করতে বলা হয়। যার ধারাবাহিকতায় নতুন করে আমের মৌসুম আসায় আইনজীবী হাইকোর্টে এক সম্পূরক আবেদন করে নির্দেশনা চান।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।