সম্পর্কের টানাপড়েনের মধ্যে বাংলাদেশের আবেদন সত্ত্বেও ভারত মেডিকেল ভিসা পুনরায় স্বাভাবিক পরিমাণে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়নি। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই অবস্থায় চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য একটি বিরল সুযোগ তৈরি হয়েছে, যার ফলে চীন এখন বাংলাদেশের চিকিৎসা পর্যটন বাজারে জায়গা পেতে পারছে। আগস্ট মাস থেকে ভারত বাংলাদেশিদের জন্য দৈনিক ১ হাজারেরও কম মেডিকেল ভিসা প্রদান করছে, যা গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
এ পরিস্থিতি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের শীতলতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার ফলস্বরূপ বলে মনে হচ্ছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে শীর্ষ রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং শেখ হাসিনার ক্ষমতা হারানোর পর এই শীতলতা আরও প্রকট হয়েছে। বাংলাদেশের সরকার ভারতের কাছে তার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে এবং বিচার প্রক্রিয়ার জন্য পাঠানোর আবেদন করলেও, ভারত এখনও কোনো সাড়া দেয়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের ভিসা ব্যবস্থার এই সীমাবদ্ধতা চীনের জন্য সুযোগ তৈরি করেছে। বাংলাদেশের কিছু নাগরিক চিকিৎসার জন্য চীন ও থাইল্যান্ডের মতো অন্যান্য দেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জানিয়েছেন, বাংলাদেশি চিকিৎসা পর্যটকদের জন্য ইউনান প্রদেশ সফর করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে চীন বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করবে। চীন ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নিয়েছে এবং সেখানে ২৩০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে।
এদিকে, বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী ইউনূসের চীন সফরের পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে তিনি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন। চীন বাংলাদেশে একটি ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল খোলার পরিকল্পনা করেছে, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশিদের জন্য আরও সহজ স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করতে সক্ষম হবে।
এ পরিস্থিতি ভারতের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ, কারণ এই ঘটনা দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত পরিবর্তনের দিকে নির্দেশ করছে। ভারতের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব সীমিত হচ্ছে এবং চীন দক্ষিণ এশিয়ায় একটি বড় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ভবিষ্যতে কীভাবে পরিবর্তিত হবে, তা সময়ের উপর নির্ভর করবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।