মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসা বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মি (AA) রোববার সকালে মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছে। জান্তা বাহিনীর সঙ্গে কয়েক মাসব্যাপী সংঘর্ষের পর এই শহরটি দখলে নিতে তাদের ছয় মাস সময় লেগেছে। মিয়ানমারের গণমাধ্যম ইরাবতী জানিয়েছে, আরাকান আর্মি মংডু শহরের বাইরে থাকা বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নম্বর ৫-কে লক্ষ্য করে হামলা চালায়, যার ফলস্বরূপ জান্তা বাহিনীর সদস্যরা পালিয়ে যায়।
আরাকান আর্মি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা মংডু শহরসহ তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শহর—বুথিডং এবং শিন এলাকা—পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এই অঞ্চলে তারা আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (আরসা) এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) মিলিশিয়াদেরও বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলছে ভয়াবহ সংঘর্ষ, যেখানে একদিকে জান্তা সরকার এবং অন্যদিকে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে। এই পরিস্থিতি বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য পুনঃস্থাপন হলে দক্ষিণ-পশ্চিম মিয়ানমারের মানুষের দুর্দশা কিছুটা কমতে পারে। গত মাসে জাতিসংঘ জানিয়েছিল, রাখাইনে প্রায় ২০ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে, এবং আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তাও সেখানে প্রবাহিত হতে পারছে না।
এই অবস্থায়, আরাকান আর্মি সম্প্রতি গাওয়া, তাউনগুপ এবং আন শহরের দখল নেওয়ার জন্য লড়াই শুরু করেছে। আন শহরে তারা ইতোমধ্যে ৩০টি জান্তা ঘাঁটি দখল করেছে। গত বছরের অক্টোবর থেকে এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী উত্তর শান রাজ্যের অধিকাংশ অংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হচ্ছে, আরাকান আর্মি তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন অঞ্চলে নাফ নদীতে সব ধরনের নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করা হয়েছে যাতে কেউ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে না পারে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করতে হলে বাংলাদেশ সরকারকে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে অর্থপূর্ণ সংলাপ শুরু করতে হবে, তবেই একমাত্র শান্তিপূর্ণ সমাধান আসতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।