আপনারা কোলকাতা দখল করবেন আর আমরা আঙ্গুল চুষবো- মমতা

নিজস্ব প্রতিবেদক
সৌম্যা সাহা , কলকাতা প্রতিনিধি ভারত
প্রকাশিত: সোমবার ৯ই ডিসেম্বর ২০২৪ ০৪:৪৮ অপরাহ্ন
আপনারা কোলকাতা দখল করবেন আর আমরা আঙ্গুল চুষবো- মমতা

নয়াদিল্লি ও ঢাকার মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মাঝে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক নেতাদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন এবং সহিংসতার ঘটনার মধ্যে নেতিবাচক মন্তব্য করা রাজ্যের শান্তি-শৃঙ্খলাকে বিঘ্নিত করতে পারে, তাই এর বিরুদ্ধে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।


সোমবার (৯ ডিসেম্বর) পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় একটি বক্তৃতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা স্বাভাবিক। তবে, এই পরিস্থিতি সম্পর্কে এমন কোনো মন্তব্য করা উচিত নয় যা বাংলায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা দাঙ্গা চাই না, আমরা শান্তি চাই।’’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় মুসলিম, হিন্দু, শিখ ও খ্রিস্টানদের একত্রিত সমাজের কথা স্মরণ করিয়ে দেন এবং জানান, ‘‘সংখ্যালঘুদের নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা একটি ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয়।’’ 


মমতা বলেন, ‘‘বাংলাদেশে সংঘটিত সহিংসতার বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল ও গণমাধ্যমের মধ্যে সংযম প্রদর্শন জরুরি।’’ তিনি গণমাধ্যমকে বিশেষত ভুয়া ভিডিও এবং ভুল তথ্য পরিবেশন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান, কারণ ‘‘একটি রাজনৈতিক দল এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে।’’ রাজ্যের শান্তি বজায় রাখতে রাজনৈতিক নেতাদেরও দায়িত্বশীল আচরণ করার পরামর্শ দেন তিনি। 


মমতা আরও বলেন, ‘‘যারা বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে রাজনীতি করতে চান, তাদের উচিত নিজেদের রাজ্য ও জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা বিবেচনায় রাখা।’’ তিনি পশ্চিমবঙ্গে আসা বাংলাদেশি শরণার্থীদের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘‘এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, রাজ্য সরকার এর মধ্যে হস্তক্ষেপ করবে না।’’ 


বিধানসভায় বক্তৃতার সময় মমতা বাংলাদেশে ভারতীয় নাগরিকদের ওপর আক্রমণের ঘটনায় ভারত সরকারের হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন। ‘‘ধর্মীয় কারণে কোনো ব্যক্তি অত্যাচারিত হলে, আমরা তার নিন্দা জানাই এবং ভারত সরকারকে এই বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বলি,’’ মন্তব্য করেন তিনি। 


মমতার এই বক্তব্য বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হিসেবে গণ্য হচ্ছে, যা শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে।