মিতু হত্যা: চূড়ান্ত প্রতিবেদনে যা দিয়েছে পিবিআই

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২৫শে জানুয়ারী ২০২২ ০৯:০৩ অপরাহ্ন
মিতু হত্যা: চূড়ান্ত প্রতিবেদনে যা দিয়েছে পিবিআই

চট্টগ্রামে মিতু হত্যার ঘটনায় বাবা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পিবিআই। মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রাম আদালতে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা উপস্থিত হয়ে অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার প্রসিকিউশনের হাতে ২৬৬ পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদন দাখিল করেন।


জানতে চাইলে পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের প্রধান পুলিশ সুপার কাজী নাঈমা সুলতানা বলেন, মিতু হত্যার ঘটনায় আমরা বর্তমানে দু’টি মামলা তদন্ত করছি। এর মধ্যে বাবুল আক্তার যে মামলার বাদী ছিলেন আদালতের নির্দেশে সেই মামলার অধিকতর তদন্ত করছি। আর মোশাররফ হোসেন যে মামলার বাদী ছিলেন, সেটিতে আমরা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছি।


তিনি বলেন, ‘প্রথম মামলার তদন্তকে আদালতের পর্যবেক্ষণে সফল তদন্ত বলা হয়েছে। ওই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দ আছে এবং ১৬৪ ধারায় কিছু জবানবন্দিও নেওয়া আছে, যেগুলো মামলার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য আমরা প্রথম মামলাকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে অধিকতর তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। দ্বিতীয় মামলাটি আমরা আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী এবং আমাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছি। দু’টি মামলা হওয়ার কারণে যেহেতু কিছুটা আইনি জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে, সেই জন্য দুই মামলাকে একটি মামলায় নিয়ে আসার আবেদন করা হয়েছে।


২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি করে ও ছুরিকাঘাতে খুন করা হয় মিতুকে। স্ত্রী খুনের ঘটনায় পুলিশ সদর দফতরের তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।


গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা নাটকীয়তার পর ২০১৬ সালের আগস্টে বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। হত্যাকাণ্ডের পরের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন প্রথম এই খুনে বাবুলের জড়িত থাকার সন্দেহ প্রকাশ করেন।


নগর গোয়েন্দা পুলিশের হাত ঘুরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার তদন্তভার পড়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের ওপর। প্রায় দেড় বছর পর ২০২১ সালের ১১ মে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। পরদিন বাবুল আক্তারের মামলায় আদালতে ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। তাতে উল্লেখ করা হয়— তদন্তে বাদী বাবুল আক্তারের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।


ওই দিনই অর্থাৎ ১২ মে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার বাকি সাত আসামি হলেন- মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক প্রকাশ হানিফুল হক প্রকাশ ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু, মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার সাক্কু ও শাহজাহান মিয়া।


পিবিআই হেফাজতে থাকা বাবুল আক্তারকে ১২ মে মোশাররফের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বর্তমানে বাবুল আক্তার কারাগারে আছেন।