শেষ রাতে দৌলতদিয়ায় নদী ভাঙন, ৫ বসতঘর নদীগর্ভে

নিজস্ব প্রতিবেদক
মইনুল হক মৃধা, জেলা প্রতিনিধি, রাজবাড়ী
প্রকাশিত: শুক্রবার ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৪:২৪ অপরাহ্ন
শেষ রাতে দৌলতদিয়ায় নদী ভাঙন, ৫ বসতঘর নদীগর্ভে

রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ৩নম্বর ফেরিঘাটে বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে হঠাৎ পদ্মা নদীর ভাঙনের কারণে দৌলতদিয়া ৩নং ফেরি ঘাট ও ঘাটের পাশে অবস্থানরত ৫টি পরিবারের বসত বাড়ী নদী গর্ভে চলে যায়। এতে বন্ধ রয়েছে ৩নং ফেরিঘাট। অনত্র ঘর-বাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে ঘাটের আশে-পাশে বসবাসরত একাধিক পরিবারগুলো।


এদিকে পদ্মা নদীর ভাঙনের কারণে গত ৬ সেপ্টেম্বর দৌলতদিয়া ঘাটের ৫নং ফেরিঘাট নদী গর্ভে চলে যায়। ৫নং ফেরি ঘাট নদীতে চলে যাওয়ায় প্রায় ১মাস যাবৎ বন্ধ রয়েছে ঘাটটি। বর্তমান দৌলতদিয়া ঘাটে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের ৭টি ঘাট রয়েছে। এর মধ্যে ১ ও ২ নম্বর ফেরি ঘাট কয়েক বছর যাবৎ বিকল হয়ে পরে আছে। চলতি মাসের সেপ্টেম্বর থেকে ৫নং ফেরি ঘাট বন্ধ রয়েছে। ভোর রাত থেকে ৩নম্বর ফেরি ঘাটের কিছু অংশ নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে। ৪, ৬ ও ৭নম্বর ফেরি ঘাট সচল রয়েছে। জরুরী ভাবে নদী শাসনের কাজ না করলে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট নদী ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে।


বাংলাদেশ অভ্যান্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা বন্দরের অফিস সূত্রে জানা যায়, হঠাৎ রাত ৩টার পর থেকে ৩নং ফেরিঘাট ও ঘাটের নিচের কিছু অংশ নদীতে বিলীন হয়ে যায়। জরুরী ভাবে ফেরিঘাট রক্ষার্থে জন্য বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকাতে কাজ চলছে।


নদীতে ভাঙন কবলিত মো. ছালাম শেখ এর স্ত্রী হাজেরা বেগম বলেন, কোথায় যাবো? কি করবো? কে আমাদের এতটুকু ঘর বানানোর জায়গা দিবে? কয়েকবার নদী ভাঙনের কবলে পড়েছি। জায়গা জমি থাকলে আমরা কি নদীর পারে এসে বসবাস করতাম?  তিনি বলেন, রাতে যখন নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে তখন আমাদের রক্ষা করতে কেউ আসেনি। কে আসবে? আমাদের কাছে আসে শুধু শুনতে, ভোট চাইতে। নির্বাচন শেষ হয়ে গেলে তারা আর আমাদের খোজ খবর নেয়না। আমরা কি সরকারের কোন সহযোগিতা পাবোনা?


নদীতে ভাঙন কবলিত হারুন সরদার বলেন, ভাঙন শুরু হলে তারা নদীতে বস্তা ফেলানোর কাজ শুরু হয়। কিন্ত যখন শুকনো মৌসুম থাকে তখন কোন কাজ করা হয়না। ভাঙন শুরু হলে এরা তরিঘরি করে। তিনি আরো বলেন, এভাবে চললে মানচিত্র থেকে দৌলতদিয়া ঘাটের নামই থাকবে না।


বাংলাদেশ অভ্যান্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ আরিচা বন্দরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, নদী ভাঙন প্রাকৃতিক দুর্যোগ। তবে রাত ৩টা থেকে ৩নম্বর ফেরি ঘাট নদী ভাঙনের কবলে পড়ার কারনে আমরা সকাল থেকে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজ শুরু করেছি। এই কাজ চলমান থাকবে।